Advertisement
E-Paper

গ্রেফতার না করেই থানায় সাত দিন

গভীর রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সাত দিন ধরে এক নাবালককে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়িতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৪২

গভীর রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সাত দিন ধরে এক নাবালককে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়িতে।

মনোজ মাকে মুণ্ডা নামে ওই নাবালকের পরিবারের দাবি, গত সাত দিনই থানায় গিয়ে মনোজকে চা-খাবার দিয়ে এসেছেন তাঁরা। আদালতে না হাজির করিয়ে আইন ভেঙে ওই নাবালককে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ জানানো হয়েছে রাজ্যের আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সদস্য সচিবকে। মনোজের পরিবারের সদস্যরা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কলকাতা দফতরে ফ্যাক্স পাঠিয়ে শনিবার অভিযোগ জানিয়েছে।

চম্পাসারির বাসিন্দা মনোজকে গত ২৪ জুন রাতে প্রধাননগর থানার পুলিশ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তার পরদিন সকালে প্রধাননগর থানায় গিয়ে পরিবারের সদস্যরা মনোজের সঙ্গে দেখাও করেছেন বলে দাবি। তাঁদের অভিযোগ, থানা থেকে জানানো হয়, মনোজকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে দিনই আদালতে পাঠানো হবে। তারপরে সাত দিন কেটে গেলেও মনোজকে আদালতে না পাঠিয়ে থানার হাজতে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ।

অবৈধ ভাবে এক নাবালককে আটকে রাখার অভিযোগে শিলিগুড়ির পুলিশের শীর্ষকর্তাদের কয়েকজন চমকে উঠেছেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচাও অভিযোগ শুনেছেন। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। তবে প্রধাননগর থানা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মনোজ মাকে মুণ্ডা বলে কাউকে থানার হাজতে আটকে রাখা হয়নি। আটকে রাখা তো দূরের কথা, থানাতে ওই নামে কাউকে ডেকেও পাঠানো হয়নি বলে প্রধাননগর থানার দাবি। যদিও, পরিবারের সদস্যদের একাংশের দাবি, রাজ্য আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সদস্য সচিবকে ফ্যাক্সে অভিযোগ পাঠানোয় নানা মহল থেকে খোঁজখবর শুরু হওয়ার পরে মনোজকে হাজত থেকে বের করে দেওয়া হয়।

আটকে রাখার অভিযোগ স্বীকার না করলেও, পুলিশ সূত্রে কিন্তু জানা গিয়েছে একটি মোবাইল চুরির অভিযোগে মনোজকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। মনোজের কাছ থেকে একটি চোরাই মোবাইল উদ্ধারও করা হয়েছে। তবে মনোজের পরিবার পুলিশের এই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে বাবা-র মৃত্যুর পরে ১৬ বছর বয়সী মনোজ দাদুর সঙ্গে থাকে। মনোজের কাকা রাজু মুণ্ডা এবং ঠাকুমা চিন্তামানকি মুণ্ডা দু’জনেই দাবি করেছেন, প্রধাননগর থানায় গিয়ে তাঁরা গত কয়েক দিন মনোজের সঙ্গে দেখা করেছেন। চিন্তাদেবী বলেন, ‘‘গত শুক্রবারই থানায় গিয়ে মনোজকে চা-বিস্কুট খাইয়ে এসেছি।’’ রাজুবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি তো বেশ কয়েক দিন গিয়ে হাজতে মনোজকে দেখেছি। ওকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পুলিশের কাছ থেকে কোনও উত্তর মেলেনি।’’ আইন অনুযায়ী, গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধৃতকে আদালতে হাজির করাতে হবে। না হলে সেই গ্রেফতারিকে ‘অবৈধ’ চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের নির্দেশ আছে।

মাসখানেক আগেই শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানায় এক আইনজীবীকে অবৈধ ভাবে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পরে পুলিশ ওই আইনজীবীকে ছেড়ে দেয়। সে ঘটনার পরে কোনও কড়া পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ। সে কারণেই এমন প্রবণতা চলছেই বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যদের।

Police station Minor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy