নতুন রূপে দীনবন্ধু মঞ্চ সেজে ওঠার পর প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং চলচ্চিত্র পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
দীনবন্ধু মঞ্চকে নতুন রূপে সাজিয়ে তার পুরনো গৌরব ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। নতুন রূপে সেজে ওঠা দীনবন্ধু মঞ্চের উদ্বোধনের পর রবিবার থেকে সেখানে আট দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুরনো ব্যবস্থার বদলে হলের সিনেমা দেখার অত্যাধুনিক পরিকাঠামো করা হয়েছে। নিচ তলায় রামকিঙ্কর প্রদর্শনী কক্ষ সংস্কার করে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। কফিশপ, কনফারেন্স হলের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যা দেখে শহরের সংস্কৃতিপ্রেমীরা খুশি।
নতুন রূপে সেজে ওঠা ওই মঞ্চ বাসিন্দাদের কাছে তুলে ধরতেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। প্রতিদিন ১ টি করে সিনেমা দেখানো হবে। সন্ধ্যা থেকে থাকছে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান। হৈমন্তী শুক্লা, অঞ্জন দত্ত, স্বাগতালক্ষী দাশগুপ্ত, লোপামুদ্রা মিত্র, পরভীন সুলতানা, শুভমিতার গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। একেক দিন একেক জন গায়ক বা গায়িকার অনুষ্ঠান থাকছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “ওই হল নতুন রূপে তৈরির ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী আগ্রহী ছিলেন। সেই মতো তাঁর সহযোগিতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সংস্কার করে মঞ্চের যে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে তা আন্তর্জাতিক মানের। কলকাতার নাম করা অডিটরিয়ামগুলির থেকে কোনও অংশে তা কম নয়।”
রামকিঙ্কর প্রদর্শনী কক্ষে চিত্র প্রদর্শনী দেখছেন গৌতম দেব ও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, দীনবন্ধু মঞ্চে এখন উন্নত মানের হলগুলির মতই ছবি দেখার পরিকাঠামো করা হয়েছে। সাউন্ড সিস্টেম অত্যাধুনিক করা হয়েছ। নাটকের ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক আলোর ব্যবস্থা থাকছে। অতিথিদের বসার ঘর সংস্কার করে ভিআইপি লাউঞ্জের মতো চেহারা নিয়েছে। একাংশ কাজ খেনও বাকি রয়েছে বলে জানান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি জানান, দ্রুত কফিশপ চালু করা হবে। তা ছাড়া দীনবন্ধু মঞ্চে যাতায়াতের রাস্তাও সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে পার্কিং সমস্যা মেটাতেও নানা পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
এ দিন আট দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দীনবন্ধু মঞ্চ সংস্কার করে অত্যাধুনিক রূপে সাজিয়ে তোলার মতো কাজে শহরের গুরুত্ব বেড়ে যায়। কলকাতায় যেমন রবীন্দ্রসদন, নন্দন সেই শহরের পরিচয়। দীনবন্ধু মঞ্চও তেমনই শিলিগুড়ির সাংস্কৃতিক পরিচয়। আইনক্স, মাল্টিপ্লেক্স গড়ে ওঠায় পুরনো পরিকাঠামো নিয়ে এর জৌলুস কিছুটা খর্ব হয়েছিল। গৌতমবাবু যে কাজটা করেছেন তাতে দীনবন্ধু মঞ্চ আবার তার পুরনো গৌরব ফিরে পেল।” নতুন প্রজেকশন ব্যবস্থা, সাউন্ড সিস্টেম জাতীয়স্তরে ছবি দেখানোর মতো পরিকাঠামো বলে তিনি জানান। শিলিগুড়িতে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি করার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সিনেমার শু্যটিং করতে মাঝেমধ্যেই অনেক প্রযোজনা সংস্থা উত্তরবঙ্গের বন পাহাড়ে আসে। কিন্তু ট্রলি থেকে ক্রেন, লাইট, ক্যামেরা, অন্যান্য সরঞ্জাম সমস্তই কলকাতা থেকে আনতে হয়। ছবির পরিচালক, নির্মাতারা উত্তরবঙ্গে কাজ করতে এসে সেই সুবিধা এখানে পান না বলে জানান কৌশিকবাবু। তিনি বলেন, “ওই সমস্ত সামগ্রিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলে এখানে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি গড়ে ওঠা সম্ভব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy