বাইক চালক তো বটেই পিছনে বসা আরোহীরও যদি হেলমেট না থাকে, তাহলেও কোনও পাম্পে পেট্রল পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশি চোখরাঙানিতেই হোক বা আইন মানার ব্যাপারে বিবেকের তাড়নাতেই হোক আইন লাগু হওয়ার পর থেকেই পাম্প মালিকরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তাই প্রথম দিনই তেল না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে শিলিগুড়ির অনেক বাইক আরোহীকে।
তেল না হলে গাড়ি চলবে না। তাই কয়েকজনকে আবার পাম্পের বাইরে এসে হেলমেট ধার চাইতেও দেখা গিয়েছে। যদিও কাজ হয়নি কোনওটাতেই। অনড় পাম্প কর্মীরা সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘নো হেলমেট, নো পেট্রল।’’
রবিবার বিকেলে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট অফিসে, সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা জানিয়ে দেন, এ দিন বিকেল থেকেই এই আইন কার্যকর করা হচ্ছে। তিনি বলেন,‘‘নির্দেশ খেলাপ করলে মামলা দায়ের হবে, কারাদণ্ডও হতে পারে। সব পাম্পের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পরীক্ষা করা হবে।’’ সেই সঙ্গে হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামুলক করতে হেলমেট ছাড়া পার্কিংয়েও নিষেধাজ্ঞা আনতে চলেছে শিলিগুড়ি পুলিশ। এদিন কমিশনার বলেন, ‘‘শহরের পুরসভা নির্ধারিত ফি পার্কিং জোনে বাইক রাখতে গেলেও চালককে হেলমেটধারী হতেই হবে। এই নির্দেশিকাও দ্রুত বলবৎ করা হবে।’’
হেলমেটবিহীনদের পেট্রল না দেওযার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন নর্থবেঙ্গল পেট্রল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল পাল চৌধুরী সহ অন্যরা। নিরাপত্তার খাতিরে তাঁরা এই নির্দেশ কঠোরভাবে মেনে চলবেন বলে জানিয়েছেন। বাইক চালকদের অনেককেই হেলমেট পড়ে না বেরোনোয় অপ্রস্তুত হতে হলেও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। হাকিমপাড়ার সঞ্জীব পাল যেমন রবিবার বলে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে হেলমেট ছাড়াই বেড়িয়েছিলেন। তাঁকে ফিরিয়ে দেন এয়ারভিউ মোড়ের একটি পাম্পের কর্মীরা। বাধ্য হয়েই বাড়ি ফিরতে হয় তাঁকে। তিনি বললেন, ‘‘আমাদের সিনেমা দেখার কথা ছিল। নির্ধারিত শো হয়ত দেখতে পাব না, কিন্তু শিক্ষা হয়ে থাকল।’’ শুধু আইন বলবৎ করেই ক্ষান্ত থাকছেন না তাঁরা, নিয়মিত নজরদারি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। পেট্রল পাম্পগুলি ঠিকমত আইন কার্যকর করছে কিনা, তা জানার জন্য পাম্পগুলির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও ‘সারপ্রাইজ’ ভিজিট করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাতে হেলমেটবিহীন বাইক চালককে ন্যূনতম একশো থেকে তিনশো টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। কিন্তু যে পাম্প থেকে হেলমেট ছাড়া চালককে পেট্রল দিতে দেখা যাবে অভিযোগ হলে ওই পাম্প মালিকের জরিমানা সহ সর্বাধিক দু’বছর জেলও হতে পারে।
রাতে বেপরোয়া বাইক রুখতেও কঠোর হচ্ছে পুলিশ। বিশেষ করে কলকাতায় রাতে উড়ালপুলগুলিতে যেমন নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তেমন শিলিগুড়িতেও এখন থেকে রাতে পুলিশি নজরদারি থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy