Advertisement
E-Paper

প্রতীক্ষালয় তৈরির জায়গা নেই শহরে

রায়গঞ্জ জেলা সদরের স্বীকৃতি পেয়েছে ১৯৯২ সালে। সেই থেকে কাঠ ফাটা রোদ আর ভরা বর্ষায় মাথা বাঁচাতে শহরের বাসস্টপ গুলিতে প্রতীক্ষালয় তৈরির জন্য বিভিন্ন মহলে দরবার শুরু করেছেন বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসনের কাছে যেমন অনুরোধ করেছেন, পাশাপাশি আর্জি জানিয়েছেন পুরসভার কাছেও।

গৌর আচার্য

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০২:১৭
শহরের মোহনবাটি এলাকার এই জায়গায় এক সময় যাত্রী প্রতীক্ষালয় ছিল। তবে বছর পনেরো আগে তা ভেঙে দেওয়া হয়। —নিজস্ব চিত্র।

শহরের মোহনবাটি এলাকার এই জায়গায় এক সময় যাত্রী প্রতীক্ষালয় ছিল। তবে বছর পনেরো আগে তা ভেঙে দেওয়া হয়। —নিজস্ব চিত্র।

রায়গঞ্জ জেলা সদরের স্বীকৃতি পেয়েছে ১৯৯২ সালে। সেই থেকে কাঠ ফাটা রোদ আর ভরা বর্ষায় মাথা বাঁচাতে শহরের বাসস্টপ গুলিতে প্রতীক্ষালয় তৈরির জন্য বিভিন্ন মহলে দরবার শুরু করেছেন বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসনের কাছে যেমন অনুরোধ করেছেন, পাশাপাশি আর্জি জানিয়েছেন পুরসভার কাছেও। অথচ নড়েচড়ে বসেনি কেউই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, উল্টে রাস্তা চওড়া করার জন্য জেলা প্রশাসন শহরের মোহনবাটি ও শিলিগুড়ি মোড় এলাকার দুটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভেঙে দেয়। উত্তরবঙ্গের অনেক পুর এলাকায় পুরসভার উদ্যোগে যাত্রী শেড তৈরি হলেও রায়গঞ্জে তা কেন হয় না সেটাই প্রশ্ন শহরবাসীর। শুধু প্রশাসন নয়, ডান-বাম বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নিত্যযাত্রীরা

রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক বিপুলকুমার বিশ্বাস ও উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক রণধীর কুমার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি বিস্তারিতভাবে খোঁজ নিয়ে না দেখা পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক তথা রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্তের দাবি জায়গার অভাবেই নাকি করা যায়নি যাত্রী প্রতীক্ষালয়। তিনি বলেন, ‘‘শহরের কসবা মোড় থেকে শিলিগুড়ি মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্টপে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরির করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। যাত্রীদের সমস্যা সমাধানে আমার বিধায়ক তহবিলের টাকা থেকে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গার অভাব ও শহরে বিপুল সংখ্যক যানবাহনের কারণে সেই কাজ করতে পারিনি।’’

তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘শহরে জায়গার অভাব আছে ঠিকই, তবে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরির জন্য রাজ্য সরকার ও পুরসভা যৌথভাবে এগিয়ে আসলে আমি তাদের সবরকম সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’’

এই যুক্তি আর পাল্টা যুক্তি নিয়ে অবশ্য মাথা ঘামাতে নারাজ এলাকার বাসিন্দারা। বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে বাস বা গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়াতে গিয়ে রীতিমত নাজেহাল তাঁরা। রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা একটি মোবাইল পরিষেবা সংস্থায় কর্মরত প্রিয়াঙ্কা দাস বা উদয়পুর এলাকার স্কুল শিক্ষক বাপি দত্ত যাঁদের প্রতিদিনই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়াতে হয়, তাঁরা দুজনেই বলেন, ‘‘উত্তর দিনাজপুর জেলা গঠনের ২৩ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জেলা সদর রায়গঞ্জে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি না হওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’ তাঁদের সঙ্গে সুর মিলিয়েই পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত সোম বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের উচিত শিলিগুড়ির আদলে রায়গঞ্জের বিভিন্ন বাসস্টপে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি করা।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য বিষয়ক পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য বলেন, ‘‘আমি প্রায় দু’বছর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরকে শহরের বিভিন্ন বাস স্টপে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরির একটি প্রস্তাব দিয়েছি। পরের আর্থিক বছরে যাতে সেই কাজ হয়, সেই ব্যাপারে বিভাগীয় মন্ত্রী গৌতম দেবকে অনুরোধ করব।’’

Raiganj Bus Stop Passenger siliguri Mohanbati Uttar Dinajpur Bipul Kumar Biswas CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy