Advertisement
E-Paper

প্রচারেও তেমন উত্তাপ নেই জলপাইগুড়িতে

কোথাও দল পরিবর্তন। বিরোধীদের নিকেশ করার গর্জন। আবার কোথাও প্রার্থীদের সাদামাঠা ভোট ভিক্ষা। শহরের সমস্যা নিয়ে শোনা গেল না তরজা। পদযাত্রা হল, তবে নেই উত্তাপ। কে বলবে পুরসভা ভোট দোরগোড়ায়! রবিবার গতানুগতিক ছুটির মেজাজে কাটল জেলা সদর জলপাইগুড়ির ভোট প্রচারের আরেকটা দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৬
রবিবার জলপাইগুড়িতে কংগ্রেসের প্রচার।

রবিবার জলপাইগুড়িতে কংগ্রেসের প্রচার।

কোথাও দল পরিবর্তন। বিরোধীদের নিকেশ করার গর্জন। আবার কোথাও প্রার্থীদের সাদামাঠা ভোট ভিক্ষা। শহরের সমস্যা নিয়ে শোনা গেল না তরজা। পদযাত্রা হল, তবে নেই উত্তাপ। কে বলবে পুরসভা ভোট দোরগোড়ায়! রবিবার গতানুগতিক ছুটির মেজাজে কাটল জেলা সদর জলপাইগুড়ির ভোট প্রচারের আরেকটা দিন।

এ দিন বিকেলে জলপাইগুড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল আয়োজিত সভায় হাজির হয়ে ৯৫ জন ঘাসফুল পতাকা হাতে তুলে নেন। ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, “এ দিন ওয়ার্ডের যে বাসিন্দারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে সিপিএম সমর্থক। ওয়ার্ডে বামফ্রন্টের হয়ে কথা বলার মতো কেউ রইল না।” তৃণমূল যুব নেতার দাবি শুনে হেসেছেন পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা সিপিএমের প্রমোদ মণ্ডল। তাঁর কথায়, “নিজেদের কিছু সমর্থক জুটিয়ে হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে সৈকতবাবু চমক দেওয়ার চেষ্টা করছেন। লাভ হবে না। ভোট বাক্সে দেখবেন নিজের ঘর ফাঁকা।”

তরজা চলছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এখানে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বড় অংশ তাঁদের প্রার্থী অয়ন ভট্টাচার্যের পক্ষে প্রচারে নেমেছে। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ সিংহের পাল্টা দাবি, বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে কেউ নেই। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বামফ্রন্ট সমর্থকরা পদযাত্রা করেন প্রার্থীর সমর্থনে। সেখানেও উচ্ছ্বাস কিছুটা ফিকে লেগেছে অনেকেরই।

রবিবার জলপাইগুড়িতে বিজেপির প্রচার।

রবিবাসরীয় ভোটের প্রচার যেমন ছিল নিস্তেজ তেমন উদাসীনতা দেখা গিয়েছে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে। পাড়ার আড্ডা অথবা চায়ের দোকানে ভোট নিয়ে আলোচনা খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে। যদিও প্রার্থীদের নামে দেওয়াল লিখন হয়েছে। ফ্লেক্স ঝুলেছে। প্রার্থীরা বাড়িতে ঘুরছেন। তবুই কেমন যেন একটা নিস্তেজ ভাব। কি বলছেন বাসিন্দারা ?

প্রবীণ আইনজীবী কমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজনৈতিক নৈতিকতার চূড়ান্ত অধঃপতন ঘটেছে। যে কারণে দলীয় প্রার্থীরা এমন কোনও বক্তব্য তুলে ধরতে পারছেন না যেটা চর্চার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। মানসিক রসদ না পেয়ে সাধারণ নাগরিক জীবনে তাই ভোট নিয়ে উদাসীনতা বেড়েছে।” সমাজপাড়ার বাসিন্দা প্রসন্নদেব মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তানিয়া সরকার বলেন, “শহরের সমস্যা নিয়ে তো কোন কথা শুনছি না। যুক্তি সাজিয়ে মানুষের মন জয় করার পরিবর্তে প্রার্থীদের মধ্যে যে ভাবে হোক জয়লাভের ঝোঁক প্রবল। তাই ভাল লাগে না।”

ভোট নিয়ে বাড়ন্ত উদাসীনতা যে মোটেও ভাল লক্ষণ নয় মানছেন ডান ও বাম নেতৃত্ব। জেলা সিপিএম সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, “এটা চিন্তার বিষয়। প্রতিটি রাজনৈতিক দল যদি উন্নয়ন নিয়ে যুক্তিপূর্ণ রাজনৈতিক বক্তব্য রাখে তবেই সাধারণ মানুষের আগ্রহ ফিরবে।” তিনি আশাবাদী, “কয়েকদিন পর থেকে এই শহরেও ভোটের উত্তাপ বাড়বে।”

প্রদেশ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, “পুরসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটে সাধারণ মানুষ তাঁদের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানের কথা শুনতে চায়। দুঃখজনক হলেও সত্যি এমন বক্তব্যের ঘাটতি বাড়ছে। উল্টে কাদা ছোড়াছুড়ির বহর দেখে শহরের শিক্ষিত সমাজ চুপ হয়ে যাচ্ছে।”

—নিজস্ব চিত্র।

jalpaiguri poll campaign vote excitement north bengal news jalpaiguri municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy