ভূমিকম্পের আতঙ্ক সরিয়ে ছন্দে ফিরছে শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গ। সোমবার সন্ধের পরে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নতুন করে কম্পন অনুভূত হয়নি। সোমবার সন্ধের কম্পনের পরে রাতে ফের আতঙ্কে বাসিন্দাদের রাত জাগতে দেখা গিয়েছিল শিলিগুড়িতে। সোমবার রাতে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনও শেডের নীচে বাসিন্দাদারে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে অবশ্য সে ছবি চোখে পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে, ত্রাণ বিলির কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ভূমিকম্প পীড়িতদের সাহায্যের জন্য হেল্প-লাইন খুলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হেল্প লাইন খোলা হয়েছে উত্তরকন্যাতেও। তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ক্ষয়-ক্ষতির সমীক্ষার কাজ শেষ হয়নি।
গত সোমবারের ভূমিকম্পে মিরিকে শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কম্পনের উৎসস্থল ছিল মিরিকের কাছাকাছি। জিটিএ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত সমীক্ষায় জানা গিয়েছে অন্তত ১১টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৭১টি বাড়ির। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলি করা হয়েছে, সেই সঙ্গে নেপালেও ত্রাণ পাঠানোয় জিটিএ উদ্যোগী হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গত রবিবারই ভূমিকম্পের আতঙ্কের জন্য দু’দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জিটিএ। মঙ্গলবার ছুটির মেয়াদকে আরও দু’দিন বাড়িয়ে দিয়েছে জিটিএ। তবে কোথায় কত ক্ষতি হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ হিসেব এখনও প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়নি বলে জানানো হয়েছে।
দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক রচনা ভগৎ বলেন, ‘‘এখনও ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত তালিকা এসে পৌঁছয়নি। তবে দার্জিলিং জেলায় অন্তত হাজার খানেক এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। দুর্গতদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।’’ মিরিকের ওকায়তি, নান্দুলাল গাঁও, মুর্মা, পুটুং, সিসনে, আপার টবলঙ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি ছিল। পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে এ দিন জরুরি বৈঠকে বসেছিল জিটিএ। বৈঠকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠকেই গোর্খা রঙ্গ মঞ্চে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা, নেপালে ত্রাণ পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নেপালে আটকে পড়া বাসিন্দাদের ফেরত আনতেও কন্ট্রোল রুম থেকে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।