Advertisement
E-Paper

খোলা হয়নি সরকারি হোর্ডিং, ক্ষুব্ধ বিরোধীরা

শহরের বর্ধমান রোডের কবরস্থান। গেটের বাঁ পাশে বড় করে ঝোলানো প্রকল্পের খতিয়ান দেওয়া হোর্ডিং। উল্টো দিকে, বিদ্যাসাগর রোডের মুখে ঝোলানো শিলিগুড়ি পুরসভার প্রস্তাবিত রাস্তা, কালভার্ট, ড্রেন তৈরির খতিয়ান। কিলোমিটার খানেক এগোলেই জলপাইমোড়। রাস্তার মোড়ে একই প্রকল্পের খতিয়ান।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৬ ০২:৩৮
এখনও খোলা হয়নি হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র।

এখনও খোলা হয়নি হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র।

শহরের বর্ধমান রোডের কবরস্থান। গেটের বাঁ পাশে বড় করে ঝোলানো প্রকল্পের খতিয়ান দেওয়া হোর্ডিং। উল্টো দিকে, বিদ্যাসাগর রোডের মুখে ঝোলানো শিলিগুড়ি পুরসভার প্রস্তাবিত রাস্তা, কালভার্ট, ড্রেন তৈরির খতিয়ান। কিলোমিটার খানেক এগোলেই জলপাইমোড়। রাস্তার মোড়ে একই প্রকল্পের খতিয়ান। ছোট ছোট আকারের সেই হোর্ডিংয়ে চোখ বুলিয়ে কি‌ছুটা এগোতেই শক্তিগড়ের একের পর এক রাস্তার মুখে প্রকান্ড আকারের লোহার খুঁটিতে ঝোলানো সরকারি হোর্ডিং। কোথাও ম্যাস্টিক রাস্তার বিবরণ, কোথাওবা আবার রাস্তা চওড়া করার বিবরণ। গলিপথে এগোতেই শক্তিগড় বিদ্যাপীঠের সামনে মাঠের দুই ধারে একই রকম সুবিশাল হোর্ডিং। পাশের জলধারের সামনেও সিটিজেন পার্ক তৈরির একই রকম হোর্ডিং।

একই ছবি ডাবগ্রাম মাতৃসদন লাগোয়া সেতুর পাশেও। সেখানেও লোহার খুঁটিতে ঝোলানো প্রকল্পের খতিয়ান। শহরের কলেজপাড়া কলেজের দুই গেটের দুই পাশে মাঠের সীমানা প্রাচীরের গাঁ ঘেষে একই হোর্ডিং। এর কয়েকশো মিটারের মধ্যে নির্মীয়মান চিলড্রেন্স পার্কের সামনে একটিমাত্র হোর্ডিং অবশ্য প্লাস্টিক, রশি দিয়ে ঢাকা। শিলিগুড়ি হাসপাতাল লাগোয়া চিলড্রেন্স পার্কেও একই হোর্ডিং। এই জিনিস হিলকার্ট রোডের মহানন্দা সেতু লাগোয়া দুটি পার্ক, একের পর এক বাইফারকেশনের। এক অবস্থা বর্ধমান রোডের ওভারব্রিজের ফুটপাথের ধারেও। আবার জংশন, মাল্লাগুড়ি, সেবক রোড, বা নিবেদিতা রোড বাদ নেই সরকারের প্রকল্পের হোর্ডিং। কোথাও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের, কোথাও বা শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ)-র বা কোথাও অন্য দফতরের।

৪৮ ঘন্টার মধ্যে সরকারি বিজ্ঞাপন ঢেকে ফেলা বা খুলে দেওয়ার নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের নির্দেশের সমসয়ীমা বৃহস্পতিবার শেষ হয়ে গেলেও, শহর জুড়ে এমন সরকারি হোর্ডিং ছয়লাপ বলে শাসক বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন সময় অভিযোগ করা হলেও প্রশাসনের তরফে ওই হোর্ডিং খোলা নিয়ে গড়িমসি চলছে। ভোটের কাজে যুক্ত একাংশ প্রশাসনিক কর্তা যুক্তি দেওযার চেষ্টা করে যাচ্ছেন, বিভিন্ন প্রকল্পের খতিয়ান দিয়ে তৈরি ওই সমস্ত হোর্ডিং শুধুমাত্র ‘ইনফরমেশন’। তাতে কোনও ছবি না থাকায়, তা ঢাকা বা খোলার দরকার নেই। এটা নিবার্চন বিধি ভাঙার বিষয় নেই। পরে অবশ্য এদিন বিকালের পর অবশ্য মহকুমা নির্বাচনী দফতর থেকে হোর্ডিংগুলি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করা হয়।

এই প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন অবশ্য ভোটের দিন ক্ষণ ঘোষাণার সঙ্গে সঙ্গে সুস্পষ্ট নিয়মাবলি জানিয়ে দিয়েছে। তা অনুযায়ী, সরকারি টাকার তৈরি কোনও হোর্ডিং, প্রচার সামগ্রী রাখা যাবে না। তা বিধিভঙ্গের সামিল। এমনকী, ভোটের দিন ঘোষণার আগে সেগুলি টাঙানো বা ঝোলানো হলেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। কমিশন মনে করছে, এই হোর্ডিংগুলি থাকলে ক্ষমতায় থাকা দলকে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হবে। যা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। তাই তা খুলে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। তার পরেও তা এখনও হয়নি বলে অভিযোগ।

শিলিগুড়ি পুর এলাকার ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩টি দার্জিলিং জেলায়। বাকি ১৪টি জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে। দুই জেলার জেলা নিবার্চনী আধিকারিক তথা জেলশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব এবং পৃথা সরকারের দাবি, সরকারি সম্পত্তিতে প্রচারের বিষয়টি দেখা হয়েছে। কোথাও কোনও মন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করা হোর্ডিং রাখা হয়নি। অন্য হোর্ডিংগুলি ঘুরে ঘুরে এমসিসি দল দেখছেন। সেগুলি নিয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন বিরোধীরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টচার্য বলেছেন, ‘‘প্রশাসনের অফিসারেরা শাসক দলের চোখে ভাল থাকার জন্য কমিশনের নির্দেশ ঠিকঠাক পালন করছেন না। তা না করে নানা যুক্তি সাজাচ্ছেন। আমি কমিশনকে চিঠি দিয়ে সব জানাচ্ছি।’’ একই ভাবে জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের বক্তব্য, ‘‘আমরা বিষয়টিতে নজর রাখছি। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে ভাল। নইলে জায়গা ধরে ধরে বিস্তারিত অভিযোগ কমিশনে জানাব।’’

তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের বক্তব্যকে আমল দিতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘‘আমরা কমিশনের নিয়ম নীতি মেনে প্রচার করছি। বাকিটা তো প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনের কাজ। ওঁরা সেটাই নিশ্চয়ই করছেন।’’

hoardings campaign election commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy