সস্ত্রীক: বাড়ি ফিরে করিমুল হক। ছবি: সন্দীপ পাল
মাঝে মধ্যেই বালিতে চাকা আটকে যাচ্ছে। কিন্তু বাইক অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামাতে পারছে না রোগিণীকে। সেই ভারি মোটরবাইকটি টেনে ওই পাথর-বালি পেরিয়ে চেল নদী পেরিয়েছিলেন করিমুল হক।
সোমবার বেলা এগারোটা নাগাদ তাঁকে দেখে আশপাশের কেউ অবাক হননি। তিনি যে ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’। তিনি তো এই ভাবেই বছরের পর বছর রাত দিন ঝড় বৃষ্টি গরম ঠেঙিয়ে রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দেন। অনেকে জানতেনই না মাত্র ২৪ ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে পদ্মশ্রী হাতে পাবেন করিমুল।
সেখান থেকে ফিরে আবার মোবাইলে নতুন কলের অপেক্ষায় রয়েছেন করিমুল। তাই তাঁকে ঘিরে উৎসবের শুরুটা হয়েছে বৃহস্পতিবারেই৷ যা অব্যাহত শুক্রবারেও৷ উৎসব চলছে মালবাজারের রাজাডাঙায় তাঁর বাড়িতে৷
এ দিন দুপুরে দিল্লি থেকে ফিরে তিনি সোজা যান মাল উদ্যানে৷ সেখানে তখন তাঁকে স্বাগত জানান মালবাজার ব্লক প্রশাসনের কর্তারা৷ তাঁকে নিয়ে হয় শোভাযাত্রা৷ সেখানে নিজের লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে চোখে জল চলে আসে করিমুলের৷ বাড়ি ফেরার পথে বড়দিঘি বাজার এলাকায় তাঁকে একবার দেখার জন্য ভিড় জমে যায়। শুরু হয় বাড়ির বাইরে বাজি পোড়ানো৷ ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে তাঁর ঘরটি৷
করিমুলের দাদা খলিলুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকলেই টিভিতে ডুবে ছিলেন৷ তার মধ্যেই সন্ধ্যায় সকলের মিষ্টিমুখের জন্য পায়েস তৈরি হয়৷ রাতে বাড়ির সামনে এক দফায় পোড়ানো হয় বাজি৷ করিমুলকে স্বাগত জানাতে তাঁর মেয়ে সিমু বেগম এ দিন আবার রান্না করে রেখেছেন বাবার প্রিয় তরকারি ছ্যাকা৷
করিমুলের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম ঠিক করেছেন, স্বামীকে কষা মাংস খাওয়াবেন৷ দুই ছেলে মহম্মদ রাজু ও মহম্মদ রাজেশ বাবার জন্য কী করবেন ভেবে নিজেদের মধ্যেই আলোচনায় ব্যস্ত।
তাঁকে ঘিরে শুরু হওয়া এই উৎসবে খুশি করিমুলও। তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই আরও অনেক মানুষ এই কাজে এগিয়ে আসুন৷ তবেই আমার পদ্মশ্রী পাওয়াটা সার্থক হবে৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy