ফাইল চিত্র।
রাজস্থানে শ্রমিক খুনের ছবি রাতের ঘুম কেড়েছে কোচবিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকেরই। আত্মীয় পরিজনদের অনেকেই কাজের প্রয়োজনে থাকেন ভিন রাজ্যে। তাই উদ্বেগ বেড়েছে তাঁদের।
অনেকেই জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে ওই ঘটনার ছবি দেখে বাইরে থাকা আত্মীয়দের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নেন। তাঁদের অনেকেই নিজের রাজ্যে ফিরে আসতে চান। তুফানগঞ্জের ভেলাপেটা গ্রামের বাসিন্দা লালমোহন রায় বলেন, “আমার মামা পরিবার নিয়ে প্রায় তিন বছর রাজস্থানের জয়পুরে থাকেন। একটি কারখানায় কাজ করেন। ঘটনার জানার পর চিন্তায় রয়েছি। ফোনে কথা হলে ফিরে আসারই পরামর্শ দেব।” আলুধোয়া লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা কবিরুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “আমার আত্মীয়রা বিকানিরে থাকেন। ওই খবরটা জানার পর থেকেই চিন্তায় আছি।” তাঁর কথায়, এমনিতেই নানা ভয় থাকে, তার সঙ্গে যোগ হল এই উদ্বেগও।
বাসিন্দারা জানান, কাজের প্রয়োজনে জেলার বাসিন্দাদের অনেকেই ভিনরাজ্যে থাকেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা অন্তত এক লক্ষ। রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, অসম, কেরালা ইত্যাদি রাজ্যে বিভিন্ন কারখানা, ইটভাটায় মজুরের কাজ করেন তাঁরা। বাড়ির পরিচারিকার কাজও করেন অনেকে। নানা সময়ে তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। পরিচয় নিয়ে সংশয়ে গ্রেফতারের নজিরও রয়েছে। ওই বাসিন্দাদের ব্যাপারে এই রাজ্যের প্রশাসনের কাছে তথ্য ও যোগাযোগের নম্বর থাকলে যে কোনও সমস্যায় তাদের পাশে দাঁড়ানো সহজ হবে।
পরিস্থিতির জেরে ভিনরাজ্যে থাকা জেলার শ্রমিকদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরেও। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া বলেন, “জেলাশাসকের সঙ্গে ওই ব্যাপারে কথা বলব।” প্রশাসনের এক কর্তা জানান, গ্রাম পঞ্চায়েত, থানা, বিডিও অফিসের মাধ্যমে ভিন রাজ্যে থাকা মানুষদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হলে তাদের পক্ষেও সুবিধে হয়। প্রয়োজনে যোগাযোগ করা সহজ হবে। নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত থাকা যাবে। আগেও এ সব নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
যাদের নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন পরিবারের লোকজন, তাদের অনেকে অবশ্য পরিজনদের আশ্বস্ত করছেন। মাথাভাঙার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “জয়পুরে থাকি। ব্যাটারি গাড়ি চালাই। আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে ঠিকঠাক আছি। অন্য এলাকায় কি অবস্থা জানি না।” মাথাভাঙার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা আলিজার রহমান বলেন, “রফিকুলের সঙ্গে আমিও যোগাযোগ করেছিলাম। ফিরে এলেই স্বস্তি পাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy