পরপর শ্লীলতাহানির ঘটনায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা লাগানোর দাবি তুলেছিলেন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন ক্যাম্পাসে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসাতে সরকারের কাছে তহবিল চাওয়া হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে কর্তৃপক্ষ কেন ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসাচ্ছেন না তা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী।
সোমবার শিলিগুড়িতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কোনও কারখানা নয় যে সেখানে তহবিল গড়তে হবে। যদি দেখা যায় যথেষ্ট তহবিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে তবুও তারা খরচ করবেন না, জমিয়ে রাখবেন, তা হয় না। নিজস্ব তহবিল থেকেই সিসি ক্যামেরা লাগানোর কথা। তহবিলে টাকা না-থাকলে তবেই সরকার সাহায্য করবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রও জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে। তা ছাড়া রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান প্রকল্পে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (ল্যান) লাইন এবং ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করতে তিন কোটির মতো অর্থ ইতিমধ্যেই দেওয়া হলেও তা পড়ে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে কর্তৃপক্ষকে উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়। তা ছাড়া সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নের জন্য ন্যাকের তরফেও টাকা মিলেছে। সে সব তহবিল থেকেই ওই সমস্ত কাজ করা উচিত বলে শিক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ জানান, সরকারের কাছে তারা যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেখান থেকে টাকা পেতে সমস্যা হলে নিজস্ব তহবিল থেকেই সেই কাজ তাঁরা করতে চান।
সম্প্রতি ক্যাম্পাস লাগোয়া একটি মেসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক ছাত্রীর ঝুলম্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার আগে একাধিকবার শ্লীলতাহানির ঘটনার পরও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন তা নিয়ে শিক্ষক-ছাত্র থেকে কর্মীদের সংগঠন বারবার প্রশ্ন তুলেছে। কর্তৃপক্ষ কমিটি গড়ে সিসিটিভি বসাতে সমীক্ষা করলেও কাজের কাজ হয়নি।
উপাচার্য বলেন, ‘‘ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর জন্য একটি বিশেষ কমিটিকে রিপোর্ট দিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা রিপোর্ট দেবেন। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা ভেবেছি।’’ এখন সেই আশাতেই রয়েছেন পড়ুয়ারা।