উৎসবের মেলায় খুদেরা। — নিজস্ব চিত্র
মালদহে শুরু হল ঐতিহ্যবাহী উরস মেলা ও উৎসব। হরিশ্চন্দ্রপুরের বাংরুয়ায় পীরবাবা হজরত শা খিজির রহমতুল্লা আলেইহের স্মৃতি বিজরিত এই মেলা। এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজা লক্ষ্মণ সেনের নামও। এবার ৬৯তম বছরে পড়ল ওই মেলা। চলবে দু’দিন ধরে।
শনিবার দুপুর থেকেই পীরবাবার চিল্লাখানার ভক্তদের ঢল নেমেছে। পাশাপাশি জমে উঠেছে মেলাও। বাংরুয়ার উরস উৎসব ও মেলা এলাকায় সম্প্রীতির মেলা ও উৎসব হিসেবেও পরিচিত। দু’দিনের এই মেলায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হয়। মালদহ ছাড়াও বিহার ও ঝা়ড়খণ্ড থেকে সব সম্প্রদায়ের মানুষ ওই মেলায় যোগ দেন। কিন্তু নোটের গেরোয় মেলায় কেনাবেচা নিয়ে আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরাও।
কথিত আছে, নদীপথে রাজা লক্ষ্মণ সেনের আমলে বাংরুয়ায় এসে হাজির হয়েছিলেন পীরবাবা। তাঁর ভক্তি ও মহত্বে খুশি হয়ে লক্ষ্ণণ সেন তাঁকে ৫০০ বিঘা জমি দান করেন। সেই জমিতেই চিল্লাখানা গড়ে তোলেন তিনি। তারপর হঠাৎ করেই তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে যান বলে শোনা যায়। তারপরেই ওই পীরবাবাকে এলাকায় দেখতে পাওয়া যেত বলে কথিত রয়েছে। পীরবাবার যাঁরা খিদমত করতেন সেই খাদিম তথা ভক্তদের বংশধররা আজও বাংরুয়া এলাকায় বসবাস করেন। রাজার দান করা জমির কিছু রয়েছে খাদিমদের উত্তরপুরুষদের কাছে। কিছুটা রয়েছে উরস কমিটির কাছে। বহু পরে বাসিন্দারা পীর সাহেবের স্মৃতিতে এলাকায় উত্সব পালনের উদ্যোগ নেন।
কমিটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, পীরসাহেবের জন্মদিন বা তিরোধানের বিষয়ে কিছুই জানা ছিল না। তাঁদের দাবি, আগে ওই এলাকায় ধানচাষ হত না। পীরবাবা গ্রামে আসার পর জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অগ্রহায়ণে আমন ধান তোলার পর পীরবাবাকে পায়েস প্রসাদ দিয়ে ঘরে ঘরে নবান্ন হতো বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাই আমন ধান ওঠার পর অগ্রহায়ণের ১০ ও ১১ তারিখে উত্সব ও মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উরস মেলা ও উত্সব কমিটির তরফে সাহাবাজ আলম, হায়দার আলিরা জানান, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রচুর মানুষ মনস্কামনা পূরণের আশায় পীরবাবার চিল্লাখানায় শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হন। মেলার দু’দিন ধরে জলসা ও কাওয়ালি অনুষ্ঠানও করা হয়ে থাকে বলে জানান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy