Advertisement
E-Paper

ঘরে গিয়ে সমস্যার কথা শুনবে পুলিশ

যে সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বা থানায় যেতে যাঁদের অনীহা, এখন থেকে তাঁদের ঘরে গিয়ে সমস্যার কথা শুনবে শিলিগুড়ির পুলিশ। রবিবার শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানা থেকেই এই পদ্ধতির সূচনা হল। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এদিন ‘ভ্রাম্যমান পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র’-এর সূচনা করেন ভক্তিনগর থানায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০১:৪৪
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। —নিজস্ব চিত্র।

বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। —নিজস্ব চিত্র।

যে সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বা থানায় যেতে যাঁদের অনীহা, এখন থেকে তাঁদের ঘরে গিয়ে সমস্যার কথা শুনবে শিলিগুড়ির পুলিশ। রবিবার শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানা থেকেই এই পদ্ধতির সূচনা হল। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এদিন ‘ভ্রাম্যমান পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র’-এর সূচনা করেন ভক্তিনগর থানায়। আপাতত ভক্তিনগর থানা থেকে শুরু হলেও অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অন্য থানাগুলোতেও তা চালু হয়ে যাবে বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন।

উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, কয়েকদিন আগে এক মহিলা পারিবারিক বিবাদের অভিযোগ জানাতে আসেন ভক্তিগর থানার চমকডাঙ্গি থেকে। ওই মহিলার কাছে তিনি জানতে পারেন, তাঁর ৩৫ টাকা খরচ হয়েছে পুলিশ কমিশনারেরে অফিসে পৌঁছাতে। ফিরতে আরও ৩৫ টাকা খরচ হবে। তাঁর সারাদিনের আয় ১০০ টাকা। ওই দিন কমিশনারের কাছে যাওয়ায় আয় বন্ধ। ফলে তাঁর ক্ষতি প্রায় ১৭০ টাকা। এই ঘটনা শোনার পরেই তিনি ঠিক করেন ওই এলাকাগুলোতে নিয়মিত পৌঁছালে এই মানুষগুলোর মত অনেকেরই সুবিধা হবে। কমিশনার বলেন, ‘‘বাঁকুড়ায় এই মডেল অনুসরণ করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। তাই শিলিগুড়িতেও পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে।’’

আপাতত প্রত্যন্ত এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চমকডাঙ্গি, লালটং বস্তি, নেপানিয়া, ভাণ্ডারিগছ, চম্পকগছ ও পোড়াঝাড়ের কলাবস্তিকে প্রত্যন্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে ওই এলাকাগুলোতে মাসে অন্তত একদিন করে পুলিশের একটি ভ্যান যাবে। ওই ভ্যানে থাকবে দু’জন এএসআই ও চার থেকে পাঁচজন কনস্টেবল। শুধু পুলিশি পরিষেবাই নয়, এই ভ্রাম্যমান সহায়তা কেন্দ্রের কাছে গিয়ে মানুষ নিজেদের সামাজিক সব রকম সমস্যার কথা জানাতে পারবে। এই শিবিরে ফৌজদারি থেকে দেওয়ানি মামলার অভিযোগ যেমন শুনবে পুলিশ, তেমনি এলাকায় জলের সমস্যা কিংবা রেশনে চাল মিলছে কিনা তাও খোঁজ নেবে। পুলিশের এক্তিয়ারের বাইরের বিষয় হলে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে। সেই অনুযায়ী বিডিও, এসডিও বা ডিএমরা তার ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি। মাসের কোন দিন কোথায় শিবির করে পরিষেবা দেওয়া হবে তা আগে থেকে ওই এলাকায় লিফলেট ছড়িয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

প্রথমদিন শিবির করা হল ডাবগ্রাম ১ এলাকার বনবস্তি চমকডাঙ্গিতে। পুলিশ কমিশনার ছাড়া উপস্থিত ছিলেন এডিসি ভোলানাথ পাণ্ডে, এসিপি (পূর্ব) পিনাকী মজুমদার, ভক্তিনগর থানার আইসি রাজেন ছেত্রী, সহ ভক্তিনগর থানার বিভিন্ন ফাঁড়ির ওসিরা। স্থানীয়দের সমস্যার কথা শোনার পর সবচেয়ে সমস্যা এলাকা থেকে নিকটবর্তী জনপদ শালুগাড়ার দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে গিয়ে তবে পাকা রাস্তা। আরও ২ কিলোমিটার দূরে শালুগাড়া। স্কুল-কলেজে যেতে প্রতিদিনই এতটা রাস্তা পার হতে হয় তাঁদের। সাইকেল বা পায়ে হাঁটা ছাড়া কোনও উপায় নেই। দু’একজনের মোটর বাইক থাকলেও বাকিদের তা নেই। সমস্যার কথা শোনার পর কমিশনার নির্দেশ দেন অন্তত এক বা দুটো টোটো গাড়ির পারমিট দেওয়ানো যায় কিনা? তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গলের মধ্যে দূষণ বিহীনভাবে টোটোগাড়িই সবচেয়ে ভাল বিকল্প। আমরা পরিবহণ দফতরের সঙ্গে কথা বলে এটা চালু করার ব্যবস্থা করব।’’

Police problem Siliguri Dooars Bankura BDO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy