Advertisement
E-Paper

রাজনীতিতে পদক্ষেপ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রীর

তত্ত্বকে বইয়ের পাতায় আটকে না রেখে বাস্তবে প্রয়োগ করতে চান তিনি। পুরাতন মালদহ পুরসভার ৩ নম্বর ওর্য়াড তাই নির্দল হয়ে লড়ছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ছাত্রী শ্রাবন্তী চক্রবতী। ঠাকুমা ছিলেন প্রতিবাদী মহিলা। ঠাকুমার সেই প্রতিবাদী ইমেজই জুগিয়েছে সাহস। ভোটের ময়দানে নামায় পুরসভায় এখন অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন তিনি।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৫
মালদহে প্রচারে শ্রাবন্তী। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

মালদহে প্রচারে শ্রাবন্তী। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

তত্ত্বকে বইয়ের পাতায় আটকে না রেখে বাস্তবে প্রয়োগ করতে চান তিনি। পুরাতন মালদহ পুরসভার ৩ নম্বর ওর্য়াড তাই নির্দল হয়ে লড়ছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ছাত্রী শ্রাবন্তী চক্রবতী।

ঠাকুমা ছিলেন প্রতিবাদী মহিলা। ঠাকুমার সেই প্রতিবাদী ইমেজই জুগিয়েছে সাহস। ভোটের ময়দানে নামায় পুরসভায় এখন অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন তিনি। শ্রাবন্তী বলেন, ‘‘আমার ঠাকুমা ছবি চক্রবতী এলাকার মানুষের জন্য পুরসভায় গিয়ে বহু আন্দোলন করেছেন। ছোট থেকে ঠাকুমাকে প্রতিবাদ করতে দেখেছি। সেই সাহস আমারও রয়েছে। আর এলাকার মানুষ রয়েছেন আমার পাশে। মানুষ আমাকে আলোচনা করে নির্দল দাঁড় করিয়েছেন।’’

পুরাতন মালদহ পুরসভার ৩ নম্বর ওর্য়াডের বাসিন্দা শ্যামল চক্রবতী। তিনি পুরসভার রাজস্ব বিভাগের কর্মী। তাঁর দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে শ্রাবন্তী ছোট। মেয়ে ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়টি প্রথমে জানা না থাকলেও এখন প্রচারে শ্রাবন্তীকে সাহায্য করছেন শ্যামলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ও ছোট থেকেই প্রতিবাদী। এলাকার মানুছের কিছু হলেই এগিয়ে যায়। বিশেষ করে বধূ নির্যাতনের ঘটনায়। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলে এক বার ও বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিল। ওদের দাবি ছিল, শ্রেণি কক্ষে ফ্যান নেই। ওর মানুষের পাশে থাকার আগ্রহে আমরা গর্বিত। আর এলাকার মানুষ ওকে সমর্থন করছেন।’’

পুরাতন মালদহের আহ্লাদমণি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে শ্রাবন্তী কলাবিভাগে কালাচাঁদ স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েন। পরে মালদহ কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হয়ে এ বার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। কলেজ থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৩ সালে কলেজে এসএফআই-এর প্রার্থী ছিলেন তিনি। তবে সেই বছর কলেজে ভোট হয়নি। ফলে ভোটে দাঁড়ানো হয়নি। বাম ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে প্রথমে যুক্ত থাকলেও পরের দিকে সরাসরি আর যুক্ত থাকেননি।

শ্রাবন্তী বলেন, ‹›এ বার আমাকে বিভিন্ন দল থেকে ভোটে লড়াই করার জন্য বলা হয়েছিল। আমি দাঁড়াইনি। কারণ এলাকার মানুষেরা নিজেরাই আলোচনা করে আমাকে নির্দল দাঁড় করানোর সিন্ধান্ত নেন। তাঁদের কথা ভেবেই কোনও দলের চিহ্ন ছাড়াই আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি। সাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়াই করছি। জয়ী হলে এলাকার মানুষের জন্য আরও কাজ করতে পারব, তাই ভোটে দাঁড়ানো। প্রচারে গিয়ে তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সব সময় পাশে থাকার।›› জানালেন, এলাকায় ক্রমশ মদের ঠেকের সংখ্যা বাড়ছে। তা নিয়ে সবাই নীরব। একই সঙ্গে সুরি পাড়ায় কাঁচা মাটির রাস্তা। সব রাজনৈতিক দলের নেতা প্রতি বার তাঁদের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে রাস্তা পাকা হয় না। জল, নিকাশি এই সমস্যাগুলির সমাধান নিয়েও মানুষকে পাশে দাঁড়াতে চান তিনি।

প্রথম বর্ষের ফার্স্ট সেমেস্টারের পরীক্ষা সদ্য শেষ হয়েছে শ্রাবন্তীর। পড়ার চাপ একটু কম রয়েছে। তাই জোর কদমে নেমে পড়েছেন প্রচারের। সকালে ঘুম থেকে উঠে এলাকার মহিলা, বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন জন সংযোগ বাড়ানোর কাজে। তাঁর সমর্থনে রয়েছে তিনটি নির্বাচনী কার্যালয়। সন্ধের পর সেই কার্যালয়ে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনাও করছেন ওর্য়াডের সব থেকে খুদে প্রার্থী। তাঁর সমর্থনে শুধু নিজের এলাকায় নয় ধোপা পাড়া, পিরোজপুর, লোলাবাগ প্রভৃতি এলাকায় পড়েছে ফেস্টুন, ব্যানার। যা বিরোধীদের যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে বলে তাঁর সমর্থকদের দাবি। বয়সে ছোট হলেও তাঁকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে রাজি নন বিরোধীরা। তৃণমূলের প্রার্থী দীপ্তি চৌধুরী যেমন বলেন, ‹›এলাকার মেয়ে হলেও সে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। তাই তাঁকে আমরা হালকা ভাবে নিচ্ছি না।›› বিজেপি প্রার্থী স্বপ্না হালদার বলেন, ‹›শুধু পতাকা, ফেস্টুন টাঙালেই হবে না। মানুষের সমর্থন দরকার। যা তাঁর নেই।›› যদিও বিরোধীদের জবাবে আমল না দিয়ে শ্রাবন্তী বলেন, ‘‘আমি মানুষের জন্য কাজ করি। ভোটে জিতলেও মানুষের পাশে থাকব, হারলেও থাকব।’’

political science student old malda municipality election 2015 University of Gour Banga malda news srabanti chakraborty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy