রাস্তা আটকে দাঁড়ানো সেনার গাড়ির জেরে যানজট রোজকার ঘটনা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
একটা দুর্ঘটনাই সামনে এনে দিয়েছে শিলিগুড়ির ট্রাফিক ব্যবস্থার হাল। বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ভেঙে পড়েছে। তা বোঝা যাচ্ছে শহরের পথে বেরোলেই। তবে সমস্যা কাটানোর দায়িত্ব এড়াতেই ব্যস্ত সবাই।
প্রতি মুহূর্তে যানজটে জেরবার শহরে কোর্টমোড় থেকে জংশন স্টেশনমোড় এক কিলোমিটার যেতে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় লাগে। একই পরিস্থিতি বিধান রোড়ে, সেবক রোডে। অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশের সামনেই, অটোগুলি লোক তুলতে দাঁড়িয়ে পড়ে যেখানে খুশি। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার জায়গা আটকে দাঁড়িয়ে থাকে সেনাবাহিনীর ট্রাক। অথচ ট্রাফিক পুলিশের তরফে কোন হেলদোল নেই।
হাকিমপাড়া, সুভাষপল্লি, নজরুল সরণী, হায়দরপাড়ার বিভিন্ন ছোট রাস্তাতেও বড় বাস বিশেষ করে স্কুল বাস ঢুকছে। কোর্ট মোড় হয়ে বাঘা যতীন পার্ক এলাকায় যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের কয়েকটি বাস। তাতে ওই রাস্তাগুলিতে প্রচণ্ড যানজট হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
শহরের বেহাল পার্কিং ব্যবস্থাও ট্রাফিক সমস্যাকে বাড়িয়েছে। হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, মহানন্দা রোড় বরাবর গাড়ি পার্কিং করে রাখার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই রাস্তায় জায়গা গাড়ি রাখেন বাসিন্দারা। যানজট সে কারণে লেগেই রয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরে একই রুটে মাত্রাতিরিক্ত অটো চলাচলের কারণেও যানজট হচ্ছে। তার উপর সমস্যা বাড়িয়েছে টোটো। সেবক রো়ড, বিধান রোডের মতো রাস্তায় দ্রুত গতির গাড়ির সঙ্গে রিকশাও চলে। ট্রাফিক সমস্যা তাতে আরও বেড়েছে। এমনকী ট্রাফিক পুলিশের একাংশ অটো থেকে টাকা তোলেন বলেও অভিযোগ।
তবে সমস্যার সমাধান কবে হবে তার দিশা মেলেনি। বর্তমানে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান থাকার সময় শহরের সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়তে খসড়া পরিকল্পনা করেছিলেন। বর্তমানে তিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন বিষয়ক সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক-ও। তিনি বলেন, ‘‘সামনে বৈঠকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এসজেডিএ’র তরফে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল তা নিয়ে কথা বলব।’’
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ট্রাফিক সমস্যা দেখতে পুলিশকে পুরসভার তরফে অনেক বার বলা হয়েছে অথচ পুলিশ কোনও কথাই শুনছে না। পুরসভাকে ট্রাফিক নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও ডেকেছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান থাকলে ট্রাফিক পুলিশকে তৎপর হতে দেখা যায়। তাঁরা চলে গেলে ট্রাফিক পুলিশের আর দেখা মেলে না।’’
মেয়রের দাবি, অত্যাধুনিক পার্কিং ব্যবস্থা এসজেডিএ-রই করা দরকার। পুরসভার পুরসভার সেই অর্থ নেই। গৌতমবাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অশোকবাবু এসজেডিএচেয়ারম্যান থাকার সময় বিধান রোডে পার্কিং ব্যবস্থা করতে রেলের কাছ থেকে জমি নিয়েছিলেন। সেখানে পার্কিং ব্যবস্থা না করে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স করার চুক্তি করেছেন।’’
এই চাপানউতোরে বিরক্ত অসহায় বাসিন্দারা। তাঁদের আবেদন, অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে শুক্রবারের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ফের ঘটতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy