—ফাইল চিত্র।
জমি মেলেনি বলে জাতীয় সড়ক চার লেন করা যাচ্ছে না। সেই অংশের ‘জাতীয়’ মর্যাদা কেড়ে নিতে চাইছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়ক নিয়ে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের জেলা প্রশাসনকে সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। ১৯ নভেম্বর প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এই সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধও করানো হয়েছে বলে খবর। আধিকারকদের একাংশ মনে করছে, এই ভাবে জমি নিয়ে জেলা প্রশাসনের উপরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ চাপ তৈরি করতে চাইছেন। আইনজ্ঞদের একাংশের আবার বক্তব্য, ইচ্ছে করলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে জাতীয় সড়কের ওই অংশটি পূর্ত দফতরের হাতে চলে যাবে। ওই এলাকায় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য যদি কেউ ক্ষতিপূরণ নিয়ে থাকেন, সেই অর্থও ফেরত দিতে হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ির ফুলবাড়িতে তিন কিমি এলাকাকে চার লেনের মহাসড়কের প্রকল্প থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধূপগুড়ি বাইপাসের আট কিলোমিটার নিয়ে জমি জট রয়েছে। জট খুলতে আলোচনা শুরু হবে বলে জেলা প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সূত্রের খবর, জমি না পেলে এই অংশকেও চার লেনের প্রকল্প থেকে বের করে দেওয়া হবে। আলিপুরদুয়ার জেলায় ১১ কিমি অংশে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়নি। জমি না পেলে এই অংশও প্রকল্প থেকে বাদ পড়বে বলে প্রশাসনকে জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে ফুলবাড়ি, ধূপগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে জাতীয় সড়কের প্রায় ২২ কিলোমিটার অংশ ‘জাতীয়’ মর্যাদা হারাতে পারে।
পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের কাজে পর্যবেক্ষণের জন্য অনিন্দ্য লাহিড়িকে কলকাতা হাইকোর্ট স্পেশ্যাল অফিসার নিয়োগ করেছে। তাঁর কথায়, “আইন অনুযায়ী জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জাতীয় সড়কের কোনও অংশের মর্যাদা প্রত্যাহার করতেই পারেন। তখন তা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পূর্ত দফতরের হাতে চলে যাবে। তবে জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার দুই জেলা প্রশাসনের সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছি। আশা করছি এই পরিস্থিতি হবে না।’’
জেল প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “আমরাও চাই না সড়কের অংশ চার লেন থেকে বাদ পড়ুক। জোর করে তো কাউকে তুলে দেওয়া যাবে না। আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও বুঝতে হবে।” জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার দুই জেলাতেই ব্লকস্তরে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ঠিক হয়েছে আগামী জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে জমি তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প আধিকারিক সঞ্জীব শর্মা বলেন, “আমাদের বক্তব্য প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে। জমির অপেক্ষায় বসে থেকে আমাদের অনেক আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।” তাঁদের পরিকল্পনা, মার্চের আগে শিলিগুড়ির ঘোষপুকুর থেকে ধূপগুড়ি পর্যন্ত চার লেনের সড়কের কাজ পুরোপুরি সেরে ফেলা। সেই পরিকল্পনায় কাঁটা জমিজটই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy