Advertisement
০৩ মে ২০২৪
দুই অভিযানে তপ্ত শিলিগুড়ি

উচ্ছেদের নোটিস দিয়ে হেনস্থার মুখে রেল

উচ্ছেদের নোটিস ধরাতে গিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেই আক্রমণের মুখে পড়তে হল তাঁদের। এমনকী মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। উচ্ছেদ করা যাবে না বলে এলাকার বাসিন্দারা এর পরে এনজেপি স্টেশনে ঢোকার মুখে নেতাজি মোড় অবরোধ করেন।

এ ভাবেই অবরোধ জনতাপাড়ার বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই অবরোধ জনতাপাড়ার বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

উচ্ছেদের নোটিস ধরাতে গিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেই আক্রমণের মুখে পড়তে হল তাঁদের। এমনকী মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। উচ্ছেদ করা যাবে না বলে এলাকার বাসিন্দারা এর পরে এনজেপি স্টেশনে ঢোকার মুখে নেতাজি মোড় অবরোধ করেন। ফলে রেল ধরতে গিয়ে নাকাল হয়েছেন অনেকেই। শেষে অবরোধ তুলতে হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। তাদের চেষ্টায় ৪০ মিনিট পরে রাস্তা অবরোধ মুক্ত হয়।

শিলিগুড়ির কাছে রেলের কয়েকটি প্রকল্পের জন্য জবরদখল হঠাতে এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। বিশেষ একটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে নবান্নের আপত্তি নেই, এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গিয়েছে। মমতা নিজেও দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে সরকারি জমিতে নতুন করে জবরদখলের বিষয়টি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু এ দিন পুরনো দখলদারি নিয়ে শুধু নোটিস দিতে গিয়ে যে রকম হেনস্থা হতে হল রেলের কর্মীদের, তাতে বাকি প্রকল্পগুলি নিয়েও তাঁদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে।

বিশেষ করে এ দিনের উচ্ছেদ-বিরোধী বিক্ষোভে দখলকারী বাসিন্দাদের পাশে ছিলেন তৃণমূলের কাউন্সিলর চন্দ্রাণী মণ্ডল। চন্দ্রাণী এলাকার কাউন্সিলর। তাঁর বক্তব্য, তাই বাসিন্দাদের পাশে ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের যাতে এলাকা ছাড়া হতে না হয়, তার জন্য পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে হস্তক্ষেপে করার অনুরোধ জানাব।’’

কী হয়েছিল এ দিন? এনজেপি স্টেশন চত্বর থেকে মাত্র পাঁচশো মিটার দূরত্বে জনতাপাড়ায় উচ্ছেদের নোটিস ধরাতে গিয়েছিলেন রেলের কয়েক জন কর্মী। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, জনতাপাড়া এলাকায় গত ৩০-৪০ বছর ধরে মানুষ থাকছে। তাঁদের দাবি, ওই জমি রেলের কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও নথি এ দিন রেলের লোকজন দেখাতে পারেননি। গোটা এনজেপি এলাকার বেশির ভাগ জায়গাই রেলের। এই এলাকায় প্রায় পাঁচশো বাড়ি রয়েছে। তাতে সামনের দিকে প্রচুর দোকান থাকলেও তা না ভেঙে ভিতরের দিকের জনতাপাড়ার একটি গলির বাড়িঘর কেন ভাঙতে গিয়েছিল রেলের লোকজন, তাই নিয়েও বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিশ্চয়ই এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে।

এই সব দাবি তুলে বাসিন্দারা প্রথমে রেলের লোকেদের হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। পরে রাস্তাও অবরোধ করেন। স্টেশনের যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় অনেকেই সমস্যায় পড়েন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (পূর্ব) তপনআলো মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘কী হয়েছে, তা আমরা জানি না। রাস্তা অবরোধ থাকায় তা উঠিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।’’

রেল কর্তৃপক্ষ কিন্তু বাসিন্দাদের যাবতীয় দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এটা রেলের জমি। এখানে কোনও প্রকল্প করার কথা মাথায় রেখেই উচ্ছেদের নোটিস দেওয়ার নির্দেশ এসেছে এনজেপি-তে। সেই নোটিসই তাঁরা ধরাতে গিয়েছিলেন বাসিন্দাদের। রেলের তরফে এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, ‘‘এ দিন দখল উচ্ছেদের জন্য নোটিস দেওয়া হচ্ছিল জনতাপাড়া এলাকায়। তখনই কিছু লোক কর্মীদের আক্রমণ করে। আমরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eviction notice railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE