Advertisement
E-Paper

বিজেপি নিয়ে ভাবনা যাচ্ছেই না তৃণমূলের

লোকসভা ভোটে দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি-র প্রার্থী জিতেছিলেন। সেই ভোটে শিলিগুড়ি পুর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়েছিল। পুরভোট নিয়ে তাই তাদের প্রত্যাশার পারদ বাড়ছিল। যা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠে শাসক দলেরও। কিন্তু পুরভোটে শিলিগুড়িতে তাদের প্রার্থী ঘোষণা হতেই দলীয় কোন্দলকে ঘিরে বিজেপি শিবির অনেকটাই থিতিয়ে পড়েছে বলে দলেরই একাংশ মনে করছেন।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩১

লোকসভা ভোটে দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি-র প্রার্থী জিতেছিলেন। সেই ভোটে শিলিগুড়ি পুর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়েছিল। পুরভোট নিয়ে তাই তাদের প্রত্যাশার পারদ বাড়ছিল। যা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠে শাসক দলেরও। কিন্তু পুরভোটে শিলিগুড়িতে তাদের প্রার্থী ঘোষণা হতেই দলীয় কোন্দলকে ঘিরে বিজেপি শিবির অনেকটাই থিতিয়ে পড়েছে বলে দলেরই একাংশ মনে করছেন।

তার বড় কারণ, প্রার্থী নিয়ে দলের মধ্যেই বিরোধ দেখা দেয়। অনেক কর্মী দল ছেড়েছেন। কেউ নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে আসা ৫ জনকে তারা প্রার্থী করেন। তা নিয়েও দলের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রচার থেকে বিরত রয়েছেন। তা সত্ত্বেও তৃণমূল প্রচারে নেমে বিজেপি-র বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রেই সুর চড়াচ্ছে, তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে। অনেকটা একই পরিস্থিতি ইসলামপুর পুরনির্বাচনের ক্ষেত্রেও। কেন না, সেখানে লোকসভা ভোটে ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতে এগিয়েছিল বিজেপি। বাকি দু’টিতে কংগ্রেস। সেখানে পুরভোটে সমস্ত ওয়ার্ডেই প্রাথী দিয়েছে বিজেপি।

তবে পুরভোটে বিজেপি’কে তাঁরা গুরুত্ব দিতে নারাজ বলে জানিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বিজেপি-র যে গুরুত্ব রয়েছে, সে কথাও তৃণমূল নেতারা জানেন। তাই প্রচার সভায় বিজেপি-র প্রসঙ্গ গুরুত্বও পাচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে বিজেপি’র একটা ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে অনেকে বিজেপি’কে ভোট দিয়েছে। সেটা দেশের সরকার গঠনের নির্বাচন। কিন্তু পুরভোট তা থেকে একেবারেই আলাদা। তাই মানুষকে তো আমাদের বোঝাতে হবেই।’’ তবে তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, শিলিগুড়ি পুরভোটে বিজেপি দাঁড়াতেই পারবে না। তৃণমূলের লড়াই সিপিএমের সঙ্গে। তাই বিজেপি গুরুত্ব পেলে তাতে বামেদের বেশ কিছু ভোট কাটবে। লাভ হবে তৃণমূলের। তাই বিজেপি’কে অনেক ক্ষেত্রে তারা গুরুত্ব দিয়ে জিইয়ে রাখতেও চাইছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য ওই যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এমন ব্যাপার নেই। তৃণমূলের নিজস্ব যে ভোট রয়েছে, তাতেই বিপুল আসনে জিতব।’’

প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএমের মেয়র পদপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আসলে তৃণমূল এবং বিজেপি’র মধ্যে বিরোধ নেই। ওরা যা বলছে, তা লোক দেখানো। তৃণমূলকে হারাতে পারে একমাত্র বামেরাই। তাই তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ করতে বিজেপি’কে তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে।’’ বিজেপি’র সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া অবশ্য দাবি করেন, বিজেপি’কে ভয় পাচ্ছে শাসক দল-সহ অন্যরা। সে কারণেই তারা মানুষকে বোঝাতে চাইছে। কিন্তু মানুষ তাদের চিনে গিয়েছে। তারা বিজেপি’কেই সমর্থন করবেন। তা ছাড়া প্রাথী নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্য নেতৃত্বের অন্যতম বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী। ইসলামপুরেও শাসক দল তাদের ভয় পাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

তৃণমূলের নেতানেত্রীরা সভা সমিতিতে গিয়ে বোঝাচ্ছেন, লোকসভা নির্বাচনে দেশের সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বিজেপি’র যে গুরুত্ব ছিল পুরভোটে তা নেই। এখানে নীতি নির্ধারনের ব্যাপার নেই। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক মহুয়া মিত্রের মতো নেত্রীকে প্রচারে বেরিয়ে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘লোকসভা ভোটে বিজেপি’কে আপনারা অনেকেই ভোট দিয়েছিলেন। জিতেয়েছিলেন। ওটা দেশের সরকার গঠনের ভোট ছিল। আর এটা পুরভোট। তা ছাড়া কেন্দ্রে সরকার গঠনের কয়েক মাস পরেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি’র ভরাডুবি হয়েছে। এই পুরভোটে আর বিজেপি’কে ভোট দেওয়ার ব্যাপার নেই। আপনারা আমাদের একটা সুযোগ দিন।’’

দলেরই একটি সূত্রের খবর, মহুয়াদেবী দিল্লির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই তাঁকে ও তাঁর মতো কয়েক জন বাছাই করা নেতাকে বিজেপি সম্পর্কে বাসিন্দাদের বোঝানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ১-৫, ৭-১৫, ২৫, ২৬ এবং ৩২ থেকে ৪৭ নম্বর পর্যন্ত সংযোজিত এলাকার ওয়ার্ডগুলিতে, যে এলাকায় বিজেপি লোকসভা ভোটে ভাল ফল করেছিল।

loksabha vote siliguri tmc siliguri bjp siliguri corporation poll 2015 saumitra kundu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy