সাপের মতো একেবেঁকে বয়ে গিয়েছে বলে তার নাম সাপটানা। বেশ কয়েক বছর আগে, শীতকালেও সাপটানায় হাঁটুজল দেখেছে ফালাকাটাবাসী। এখন ভরা বর্ষাতেও নদী খাতে গড়াচ্ছে শীর্ণ জলধারা। নদীখাত দখল করে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক নির্মাণ। তার জেরেই জল বাধা পেয়ে ফিরে গিয়েছে। ভরা বর্ষাতেও তাই জল নেই সাপটানায়। আবার যখন মুজনাই নদী উপচে ক্রমাগত জল ঢুকে পড়ে সাপটানায়, তখন নদী উপচে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করে শহরে।
ফালাকাটা শহরের দু’দিক দিয়ে দু’ভাগে বয়েছে সাপটানা নদী। শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নানা বাঁকে ঘুরে নদী বয়ে গিয়েছে। ফালাকাটা শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের দোলং নদী থেকে সাপটানার উৎপত্তি। এর পরে গোপনগর, এনবিএসটিসি ডিপো, হাসপাতাল পাড়া, থানা রোড, নেতাজি রোড, জঙ্গলি কালীবাড়ি, মাদারি রোড, বিডিও অফিস পাড়া ছুঁয়ে এঁকে বেঁকে প্রায় তিন কিলোমিটার গড়িয়ে মুজনাইতে মিশেছে এই নদী। এর আরেকটি শাখাও রয়েছে। সেটিও সাপটানা নামেই পরিচিত। শাখা নদীটি মাদারি রোড, বিডিও অফিস পাড়া ও বাবুপাড়ার পাশ দিয়ে মরা মুজনাই নদীতে পড়েছে। এটি এখন নর্দমার আকার নিয়েছে। কোথাও পাঁচ ফুট তো কোথাও দশ ফুট চওড়া।
জনসংখ্যা বা দোকান-বাজার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে নদীর নাব্যতা, স্বাভাবিক গতিও। এক সময়ে চল্লিশ-পঞ্চাশ মিটার চওড়া ছিল সাপটানা। সেই নদী হারিয়ে গিয়েছে দীর্ঘ দিন আগেই। নদী খাত দখল করে নির্মাণ, নদীর মধ্যে অবাধে জঞ্জাল ফেলা হয় বলে অভিযোগ। কোথাও বাধা পেয়ে, কোথাও দূষণের জেরে শুকিয়ে গিয়েছে নদী। ফলে, শহরে কোথাও আগুন লাগলে, সাপটানার জল না পেয়ে দমকলের ইঞ্জিনকে যেতে হয় শহর লাগোয়া মুজনাইতে।