Advertisement
১৬ জুন ২০২৪
Illegal land

‘অবৈধ’ জমির কারবার, প্রশ্নে পুলিশের ভূমিকা

মিশনের ঘটনায় ধৃতদের এক জনের সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের মেলামেশা, সামাজিক মাধ্যমে ছবি শুধু নয়, বি্ভিন্ন ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানেও দু’পক্ষকে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ০৮:৩৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পরেও শিলিগুড়ি পুলিশের একাংশের সঙ্গে জমির কারবারিদের ‘ওঠাবসা’ নিয়ে পুলিশ মহলে বির্তক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, রামকৃষ্ণ মি‌শনে হামলার ঘটনার পরে পুলিশের অন্দরেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ইস্টার্ন বাইপাস, সেবক রোড এবং দুই মাইল এলাকা ঘিরে জমি-মাফিয়া, জমির কারবারিদের সঙ্গে পুলিশে একাংশের বোঝাপড়ার অভিযোগ সামনে আসছে। তাতে এক জন ইনস্পেক্টর এবং এক জন ওসি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

মিশনের ঘটনায় ধৃতদের এক জনের সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের মেলামেশা, সামাজিক মাধ্যমে ছবি শুধু নয়, বি্ভিন্ন ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানেও দু’পক্ষকে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ইনস্পেক্টর ভোটের আগে শিলিগুড়ির বাইরে ‘পোস্টেড’ হয়েছেন। ওসি’র দায়িত্বে থাকা এসআই এখনও শিলিগুড়িতে আছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের শীর্ষ স্তর ছাড়াও, বিভিন্ন এজেন্সির তরফে তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর চলছে। মিশন-মামলার অভিযুক্তেরা ছাড়াও, জমির কারবারিদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর থানা, ফাঁড়িতে নিয়মিত ঘোরাফেরা, জমির সংক্রান্ত কিছু মামলায় পুলিশ অফিসারদের একাংশের অত্যধিক ‘আগ্রহ’ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। এই সূত্রেই মিশনের জমি দখলের চেষ্টা বা পরিকল্পনায় কারা কারা জড়িত, তা বিভাগীয় স্তরে দেখা শুরু হয়েছে।

শহরের পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর মিশনের তদন্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কমিশনারেটের অন্যতম এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, ‘‘ভক্তিনগর, আশিঘর এবং এনজেপি এলাকা ঘিরে জমির কারবারিদের সক্রিয়তা রয়েছে। পুলিশের কারা কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, সবই মিশনের ঘটনার প্রেক্ষিতে দেখা হচ্ছে।’’ শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। জমিকে সামনে রেখে কারও কোনও বেআইনি কাজকর্ম বরদাস্ত করা হবে না।’’

কয়েক বছর আগেই শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দার্জিলিং জেলা এবং শিলিগুড়ির পুলিশকে সতর্ক করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের সম্পর্কে তাঁর কাছে কিছু অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান। ধরপাকড়ে শিলিগুড়ি মহকুমা জুড়ে ৭০ জনের মতো জমি-মাফিয়া, কারবারি গ্রেফতার হয়। তৃণমূল নেতা হিম্মত সিংহ চৌহানকে জমি দখলের চেষ্টায় গ্রেফতার করা হয়। কমিশনারেট এবং গ্রামীণ স্তরে পুলিশে রদবদলও হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সব কিছু থিতিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ২০২২ সালের পুরসভা, পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে ফের জমি-মাফিয়াদের সক্রিয়তা বেড়েছে বলে অভিযোগ।

পুলিশের অন্দরের খবর, সুযোগ বুঝে খালি জমি ‘দখল’, একই জমি একাধিক বার নথি তৈরি করে বিক্রি, দুর্বল ওয়ারিশ বুঝে কম দামে জমি হাতিয়ে নেওয়ার কারবার পুরোদমে চলছে। সেখানে পুলিশের একাংশের সঙ্গে বোঝাপড়া করে কাজ হয় বলেও শাসক এবং বিরোধী বিভিন্ন দলের অভিযোগ। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সরাসরি পুলিশ মদতে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সমন পাঠক পুলিশের একাংশের সঙ্গে জমি-মাফিয়াদের যোগাযোগের অভিযোগ করেছেন। যদিও তৃণমূলের দাবি, সবই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ বলা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siligurii
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE