Advertisement
০২ মে ২০২৪

রক্তশূন্য ব্লাডব্যাঙ্ক, উদ্বেগে কর্মীরা

ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের বারান্দায় ঝুলছে কালো বোর্ড ৷ যার একদিকে রক্তের বিভিন্ন গ্রুপের নাম৷ তার পাশের ঘরগুলিতে যেখানে ওই গ্রুপগুলির কত ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে তা লেখা থাকার কথা। সেগুলি ফাঁকা৷

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৭
Share: Save:

ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের বারান্দায় ঝুলছে কালো বোর্ড ৷ যার একদিকে রক্তের বিভিন্ন গ্রুপের নাম৷ তার পাশের ঘরগুলিতে যেখানে ওই গ্রুপগুলির কত ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে তা লেখা থাকার কথা। সেগুলি ফাঁকা৷ বদলে মাঝখানে বড় করে একটি ইংরাজি শব্দ ‘নিল’ লেখা৷ যার অর্থ, ‘শূন্য’ ৷

এক কথায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের অবস্থাটা এমনই৷ সেখানে এই মুহূর্তে কোন গ্রুপের এক ইউনিটও রক্ত নেই৷ গত দু-তিন ধরে এই অবস্থা চলার জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাদের আত্মীয়রা৷ উদ্বিগ্ন ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের কর্তারাও৷ ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের ইনচার্জ কে কে কর্মকার বলেন, ‘‘গ্রুপের রক্তের স্টক শেষ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে৷ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন সংগঠনকে অবিলম্বে রক্তদান শিবির আয়োজন করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে৷’’ ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে অনেক সময়ই বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের সঙ্কট দেখা দেয়৷ কিন্তু সব গ্রুপের রক্ত একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ার ঘটনা খুব বেশি ঘটেনা বলেই মত ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের৷ এক কর্মীর কথায়, ‘‘গত বছর ডিসেম্বর মাসে একবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল৷ কিন্তু দ্রুত শিবির হওয়ায় পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব হয়৷ তাই এ বারও আমরা তাকিয়ে শিবিরের দিকেই৷’’

এ দিকে রক্তশূন্য ব্লাড ব্যাঙ্কে সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা৷ ধূপগুড়ির মীনা মণ্ডল রক্তাল্পতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি৷ বৃহস্পতিবার দেখা গেল মীনাদেবীর ছেলে প্রসে়ৎজিৎ ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক ইউনিট এ বি পজিটিভ রক্তের জন্য৷ তাঁর উদ্বেগ, ‘‘চিকিৎসকরা দ্রুত মাকে রক্ত দিতে বলেছেন৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছেন রক্ত নেই৷ এখন যে কী করবো বুঝতে পারছি না৷’’ ময়নাগুড়ির জল্পেশ মোড়ের বাসিন্দা শ্রীমতি রায় টিউমার অপারেশনের জন্য শহরের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন৷ চিকিৎসকরা এ দিনই তাঁর পরিবারের লোকেদের বি পজিটিভ রক্ত জোগাড় করতে বলেন৷ কিন্তু ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে গিয়ে মাথায় হাত শ্রীমতিদেবীর ছেলে ধনঞ্জয় রায়ের৷ কারণ কোন গ্রুপের রক্তই তিনি পাননি৷

ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে কেউ রক্তের প্রয়োজনে এলে যদি সেই গ্রুপের কোনও ডোনারকে আনতে পারেন তবেই তা পাচ্ছেন৷ তাঁদের আশঙ্কা, ‘‘আচমকা যদি হাসপাতালে বড় কোনও দূর্ঘটনার রোগী আসেন, এবং তাঁর বেশি রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে বিপদ ঘটে যেতে পারে৷’’ জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনটি সংগঠন খুব দ্রুত রক্তদান শিবির করার আশ্বাস দিয়েছে৷ ওই শিবিরগুলি হলে পরিস্থিতি খানিকটা পাল্টাবে বলে আশা করছি৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

blood banks
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE