রায়গঞ্জের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকছেন এক ছাত্রী।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনা নিয়ে অপমানের অভিযোগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন বংশীহারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অলক সরকার। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষক ইস্তফা দেওয়ার পরই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয় শিক্ষা মহলে।
বংশীহারির ওই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন সেন্টার-ইনচার্জ সফিউর রহমান স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন। শ্রেণিকক্ষে তিনজনের বদলে দু’জন করে শিক্ষককে ইনভিজিলেটর হিসেবে দেখে তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে কারণ জানতে চান। প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁর স্কুলে শিক্ষক কম থাকায় দু’জন করে ইনভিজিলেটর রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মত্ত অবস্থায় আছেন কিনা, তা জানতে চান সফিউর। এই প্রশ্নে রেগে যান প্রধান শিক্ষক। সফিউর তাঁর ফোনে প্রধান শিক্ষকের তাঁর কথোপকথনের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করছিলেন বলে অভিযোগ। প্রধান শিক্ষক তাঁর ফোনটি জমা নিয়ে নেন।
এরপর সফিউর রহমান জেলার স্কুল পরিদর্শক মৃণালকান্তি রায় সিংহের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভব্য আচরণের অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে স্কুল পরিদর্শক প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করেন। পাশাপাশি, প্রধান শিক্ষককে ভেনু সুপারভাইজার পদ থেকেও সরানো হয়। এরপর ওইদিন রাতে ওই প্রধান শিক্ষক এবং বংশীহারি স্কুলের আরও চার শিক্ষককে পার্শ্ববর্তী পাথরঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ে ডেকে পাঠান স্কুল পরিদর্শক। সেখানে তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা এবং উচ্চমাধ্যমিকের অ্যাডভাইসরি কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল বসাক, সফিউর রহমান-সহ বেশ কয়েকজন কর্তাব্যক্তি প্রধান শিক্ষককে চূড়ান্ত অপমান করেন বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই প্রধান শিক্ষক মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ দিন সকালে তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিচ্ছি। আজ পর্যন্ত কোনও সমস্যা এখানে হয়নি। কিন্তু এমন ভাবে অপমানিত হতে হবে ভাবিনি। আমি ওঁদের কথায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি। তাই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছি।’’ ওই স্কলের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, স্কুলে শিক্ষক না থাকলে প্রধান শিক্ষকের তো কিছু করার নেই। সেটাই উনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, ডেকে অপমান করা হয়েছে, যা তাঁর প্রাপ্য নয়। তাঁদের বক্তব্য, এটা স্কুলের পক্ষে খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।
এদিকে, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ অস্বীকার করে উজ্জ্বল বসাক বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষককে অপমান করা হয়নি। আমরা বলেছিলাম বিষয়টি মিটিয়ে নিতে।’’ এই ইস্তফা ঘিরে শিক্ষা মহলে তীব্র আলোড়ন পড়েছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে স্কুল পরিদর্শককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন। অন্যদিকে, সফিউর রহমানের ফোনও বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy