Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বাড়তি যত্নেই সাফল্য পেল চাঁচল মহকুমার তিনটি স্কুল

বাড়তি যত্ন নিলে মফস্বল এলাকার স্কুলেও যে সাফল্য আসতে পারে তা দেখিয়ে দিল মালদহের চাঁচল মহকুমার তিনটি স্কুল। স্কুলগুলিতে এবার উচ্চমাধ্যমিকে শুধু যে নজরকড়া ফল হয়েছে তাই নয়, পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেকেই পাশ করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

বাড়তি যত্ন নিলে মফস্বল এলাকার স্কুলেও যে সাফল্য আসতে পারে তা দেখিয়ে দিল মালদহের চাঁচল মহকুমার তিনটি স্কুল। স্কুলগুলিতে এবার উচ্চমাধ্যমিকে শুধু যে নজরকড়া ফল হয়েছে তাই নয়, পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেকেই পাশ করেছে।

চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশন, চাঁচল রানি দাক্ষায়ণী গার্লস স্কুল ও হরিশ্চন্দ্রপুর হাই স্কুলে পাশের হার একশো শতাংশ। সব বিভাগেই পড়ুয়াদের প্রত্যেকেই উত্তীর্ণ হওয়ায় শিক্ষকরা তো বটেই, খুশি অভিভাবকরাও। পড়ুয়াদের প্রতি বাড়তি নজর দেওয়ার পাশাপাশি তাদের স্কুলমুখো করতে পেরেই সাফল্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

জানা গিয়েছে, মাধ্যমিকে ভালো ফল করার পরেই উচ্চমাধ্যমিকে অধিকাংশ পড়ুয়ারই শহরমুখী হওয়ায় মফস্বল এলাকার স্কুলগুলিতে ভালো পড়ুয়াদের ভিড় কম হয়। যেমন এবারও মাধ্যমিকে সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে নবম হয়েছে সুবর্ণ মন্ডল। সুবর্ণ উচ্চমাধ্যমিকে নরেন্দ্রপুরে ভর্তি হতে চেয়ে আবেদন করেছে। শুধু সুবর্ণই নয়, মহকুমার ভালো পড়ুয়াদের অনেকেই শহরের বিভিন্ন নামী স্কুলে চলে যায়। ফলে অনেক সময় বাছবিচার না করে বহু দুর্বল পড়ুয়াকেও ভর্তি নিতে হয়।

কিন্তু এবার উচ্চমাধ্যমিকে শহরের অনেক স্কুলেই যেখানে একশো শতাংশ সাফল্য আসেনি, সেখানে ওই তিন স্কুলে এই সাফল্য ধরে রাখতে এবার থেকে তারা আরও সচেষ্ট হবেন বলে স্কুলগুলির তরফে জানানো হয়েছে।

কীভাবে এল এই সাফল্য? স্কুলগুলির তরফে জানানো হয়েছে, ক্লাসে শুধু পড়িয়েই দায়িত্ব শেষ না করে যা পড়ানো হচ্ছে তা পড়ুয়ারা নিতে পারছে কি না অর্থাৎ তা ওদের বোধগম্য হচ্ছে কি না তা বিশেষভাবে নজর রাখা হত। এতেই বাজিমাত হয়েছে বলে মনে করছেন রানী দাক্ষায়নী গার্লস স্কুলের শিক্ষিকারা। আবার হরিশ্চন্দ্রপুর স্কুলে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার পর প্রতি মাসে পরীক্ষার বন্দোবস্ত ছিল। এছাড়া পাঁচদিন অনুপস্থিত হলেই অভিভাবকদের ডেকে পাঠিয়ে সতর্ক করা হত। একইভাবে সিদ্ধেশ্বরী স্কুলেও ৭৫ শতাংশ হাজিরা না হলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। টেস্ট পরীক্ষায় কেউ অকৃতকার্য হলে, কোনওভাবেই সে পরীক্ষায় বসতে পারবে না, স্কুলের তরফে সেই নির্দেশ থাকায় প্রথম থেকেই পড়াশুনার প্রতি নজর ছিল পড়ুয়াদের।

আর তার জেরেই চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের ২৭৩ জনের প্রত্যেকেই পাশ করেছে। এদের মধ্যে ১০০ জনের প্রাপ্ত নম্বর ৬০ শতাংশের বেশি। ৭৫ শতাংশের বেশি পেয়েছে ৬০ জন। সর্বোচ্চ ৪৫৯ পেয়েছেন আজনিন খাতুন। রানী দাক্ষায়ণী গার্লসে ১৫৯ জনের মধ্যে ১১৩ জনের নম্বর ৬০ শতাংশের বেশি। সর্বোচ্চ শ্রেয়সী পান্ডের প্রাপ্ত নম্বর ৪৪৬। হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুলেও ১৩৩ জনের মধ্যে ৬৪ জন ৬০ শতাংশ ও ২৬ জনের প্রাপ্ত নম্বর ৭৫ শতাংশের বেশি। সর্বোচ্চ ৪৬০ পেয়েছেন বর্ষা অগ্রবাল।

রানী দাক্ষায়নী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অসীমা ত্রিবেদী বলেন, ‘‘দেওয়ার পাশাপাশি পড়ুয়ারা তা নিতে পারল কি না সে দিকে নজর দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষিকারা নিষ্ঠাবান ছিলেন। হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুল ও চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোফিজুদ্দিন আহমেদ ও আসরারুল হক বলেন, ‘‘উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার পর অনেকেই টিউশনের উপরে জোর দিয়ে স্কুলমুখো হতে চায় না। কিন্তু স্কুলে কোনও ক্লাস যাতে বাদ না পড়ে সে দিকে কড়া নজর রাখা হত। পাশাপাশি ভালো ফল করতে হবে বলে ক্রমাগত উত্সাহিত করা হত পড়ুয়াদের। এই ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে সেই চেষ্টা থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

HS Result Exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE