Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
River Erosion

ভাঙনে তলিয়ে গেল ২০টি বাড়ি

বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধের কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। সে কাজ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান নদী পারের বাসিন্দারা।

রতুয়ার মহানন্দা টোলায় গঙ্গার ভাঙন আটকাতে সেচ দপ্তরের বালুর বস্তা ফেলে আটকানো চেষ্টা।

রতুয়ার মহানন্দা টোলায় গঙ্গার ভাঙন আটকাতে সেচ দপ্তরের বালুর বস্তা ফেলে আটকানো চেষ্টা। —নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ সাহা
রতুয়া শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:০৯
Share: Save:

২৪ ঘণ্টা আগেও বাড়িগুলি ছিল। বুধবার গঙ্গা ভাঙনে সেই বাড়ি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মালদহের রতুয়ার পবিত্রা মণ্ডল, সবিতা মণ্ডলেরা। এ দিন রতুয়ার কান্তুটোলা গ্রামে ভাঙনে গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে ২০টি বাড়ি। ত্রিপল টাঙিয়ে খোলা আকাশের নীচে নতুন করে সংসার পেতেছেন ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তপরিবারের সদস্যরা।

যদিও বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধের কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। সে কাজ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান নদী পারের বাসিন্দারা। ভাঙন রোধের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। ভাঙন রোধে ব্যর্থতার জন্য বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মুকে তিনি দায়ী করেন। সমরের ক্ষোভ, “রাজ্য সরকার ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে। বিজেপির সাংসদ দিল্লিতে গিয়ে চুপ করে বসে থাকছেন।” প্রতিক্রিয়ায় খগেন বলেন, “ভাঙন মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নেই। তাই কেন্দ্রের কাছে কোনও প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে না।’’

নৌকাতে করে বালির বস্তা নিয়ে গিয়ে ভাঙন রোধের অস্থায়ী ভাবে কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। এ দিন দুপুরে জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা ঘোষ বর্মণ, বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী, সমর মুখোপাধ্যায়েরা গ্রামে গেলে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। সব হারিয়ে তাঁদের কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্রামবাসীরা। রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ভাঙন রোধের কাজ চলছে। বর্ষার মরসুম শেষ হলে ভাঙন রোধের স্থায়ী কাজ হবে। এ ছাড়া, বড় একটি প্রকল্প তৈরি করে, সে প্রস্তাবও কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হচ্ছে।”

সেচ দফতর সূত্রে খবর, গঙ্গা, ফুলহার, মহানন্দা— তিন নদীরই জলস্তর বিপদ সীমার নীচে রয়েছে। নদীর জল নামতেই নতুন করে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। সেচ দফতরের দাবি, এ দিন রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তুটোলা গ্রামে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন হয়েছে। ভাঙনে ২০টি বাড়ি, চাষের জমি সবই তলিয়ে গিয়েছে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে কান্তুটোলা গ্রামে ভাঙন শুরু হয়। তবে এ দিন সকাল থেকে ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করে। তার পরেও ভাঙন রোধে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ নদী পারের বাসিন্দাদের। ভাবন দুর্গত পবিত্রা মণ্ডল বলেন, “দিনমজুরি করে পাকা বাড়ি তুলেছিলাম। ভাঙনে পুরো বাড়িটাই জলের তলায় চলে গেল। এক রাতের মধ্যেই ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্বহয়ে গেলাম!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ratua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE