Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তার কড়াকড়ি উত্তর জুড়ে, দাবি জঙ্গিমৃত্যুর

স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জঙ্গি নাশকতার আশঙ্কায় উত্তরবঙ্গ ও লাগোয়া নামনি অসমে ব্যাপক কড়াকড়ি শুরু করেছে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। সড়ক পথে গাড়ি থামিয়ে, রেল লাইনে নজরদারির জেরে দুটি ক্ষেত্রে উদ্ধার হয়েছে বিস্ফোরক। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে নামনি অসমের কোকরাঝাড়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:১২
শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের দফতরে তল্লাশি। —নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের দফতরে তল্লাশি। —নিজস্ব চিত্র।

স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জঙ্গি নাশকতার আশঙ্কায় উত্তরবঙ্গ ও লাগোয়া নামনি অসমে ব্যাপক কড়াকড়ি শুরু করেছে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। সড়ক পথে গাড়ি থামিয়ে, রেল লাইনে নজরদারির জেরে দুটি ক্ষেত্রে উদ্ধার হয়েছে বিস্ফোরক। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে নামনি অসমের কোকরাঝাড়ে। সেখানে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর যৌথ অভিযানের সময়ে রেললাইনে বোমা রাখতে যাওয়া একদল জঙ্গির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তাতে একজন সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গি নিহত হয়েছেন বলে যৌথ বাহিনীর দাবি। রেল লাইন থেকে একটি ৭ কেজি ওজনের একটি শক্তিশালী বোমা, ১টি গ্রেনেড, ৭.৬৫ মিলিমিটার পিস্তল, গুলি উদ্ধার হয়েছে। ওই দলে থাকা আরও ৩ জন কেএলও জঙ্গি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়িতে একটি বেসরকারি বাসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ২টি দেশি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। একটি ব্যাগে আলু ও বোমা রাখা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরে বোমা দুটি নিস্ক্রিয় করে দেয় পুলিশের বম্ব স্কোয়াড। পুলিশের তল্লাশিতে থেকে বাদ যায়নি সরকারি অফিস এমনকী আধিকারিকদের ঘরও। এ দিন সকালে শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের চেম্বারে তল্লাশি চালিয়েছেন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরা।

অসম পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ওই জঙ্গি নেতা সংগঠনের স্বঘোষিত জেলা কমান্ডার ছিলেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কোকরাঝাড় জেলার ফকিরাগ্রাম থানার রাভাপারা জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই কেএলও জঙ্গি নেতার নাম রবি রায় (২৪) ওরফে বলাই রায় ওরফে ধরমবীর রায়। তিনি সংগঠনের স্বঘোষিত কোকরাঝাড় জেলা কমান্ডার ছিলেন। তাঁর বাড়ি কোকরাঝাড় জেলার গোসাইগাঁও থানার দলগাঁও গ্রামে। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই সেনা এবং কোকরাঝাড় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরজিত সিং পানেস্বর নেতৃত্বে কোকরাঝাড় জেলা পুলিশের-এর একটি বাহিনী ওই খবর পেয়ে অভিযানে নামে। রাত ১২টা নাগাদ ফকিরাগ্রাম থানার রাভাপারা গ্রামের কাছে ৫ জন লোককে রেললাইনের উপরে উঠতে দেখে। সঙ্গে সঙ্গে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে যৌথ বাহিনী। যৌথবাহিনীকে দেখেই জঙ্গিরা গুলি ছুড়তে থাকে। যৌথ বাহিনীর পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই কেএলও জঙ্গির। বাকি ৩ জন জঙ্গি গুলি ছুড়তে ছুড়তে জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়।

উত্তরবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্তেও কড়া নজরদারি চলছে। মালদহ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা গুলিতে পুলিশ ও বিএসএফ যৌথ ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে। স্বাধীনতা দিবসের আগে মালদহের চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়া থেকে বিহারে যাতায়াতের সব ক’টি রাস্তা সিল করে দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই রাস্তাগুলি ছাড়াও মহকুমা জুড়েই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে সকাল থেকেই তল্লাশি শুরু হয়েছে। তল্লাশি চালিয়ে এদিন নম্বর প্লেটবিহীন ৮০ টি বাইক আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। রতুয়ার দেবীপুরে তল্লাশি চালানোর সময় ধরা পড়েছে খুমিয়া শেখ নামে এক সশস্ত্র দুষ্কৃতীও। তার কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি পাইপগানও উদ্ধার হয়েছে।

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, করণদিঘি, ইটাহার, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, ইসলামপুর, চোপড়া থানা এলাকার ৩৪ ও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ও হেমতাবাদ এবং কালিয়াগঞ্জ এলাকার রাজ্য সড়কে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও জেলার সব ক’টি বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, বাজার, হাসপাতাল, শপিং মল সহ নানা জনবহুল এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন ট্রেনে রেলপুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “এক জঙ্গি অসমে মারা গিয়েছে বলে খবর রয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জেলা জুড়ে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। অসম-বাংলা সীমানার বারবিশা ও ভুটান সীমানায় এসএসবি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে নজরদারি চলছে।” তল্লাশি চালানো হয়েছে এনজেপি স্টেশনেও। রেল পুলিশ এবং আরপিএফ স্টেশনে যৌথ তল্লাশি চালায়।

North Bengal Special security BSF Alipurduar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy