ফাইল চিত্র।
এ বার কি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে তৃণমূলের, জিটিএ ভোটের মুখে এমনই প্রশ্নই পাহাড় জুড়ে। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের কলকাতার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে ভোট ঘোষণার আগে কথা বলেন দলের নেতারা। আলোচনায় ঠিক হয়, জিটিএ-র ৪৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১০টি আসনে লড়বে। বাকি ৩৫টি আসনে অনীতেরা লড়বেন। তবে আসন নিয়ে রফা হলেও জোটের কোনও বিষয় থাকবে না।
সেই মতো শিলিগুড়িতে এসে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ১০টি আসনে লড়াই করার কথা বলে যান। কিন্তু শেষ অবধি দেখা যায়, তৃণমূলের আসনেও অনীতের অনুগামীরা নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। ৪৫টি আসনেই তাঁদের প্রার্থী রয়েছে। এর মধ্যে দলের সচিব অমর লামা এবং কালিম্পঙের বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচারা তৃণমূল সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন উড়িয়ে দেন। আবার রবিবারই আলাদা রাজ্যের জন্য তিনি সময়মতো কাজ শুরু করবেন বলে ঘোষণা করেছেন অনীত। এই পরিস্থিতিতে দুই দলের দূরত্ব বাড়ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। অনীত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তাঁর দলের এক শীর্ষ নেতা এ দিন অবশ্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের সরকারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। পাহাড়ের তৃণমূলের সঙ্গে নয়। দার্জিলিং পুরভোটে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল তৃণমূলের নেতারাই দাঁড় করিয়েছিলেন। এ বার আমরা আমাদের মতো করে লড়ছি।’’ আর তৃণমূলের পাহাড়ের নেতা তথা জিটিএ ভোটের প্রার্থী বিনয় তামাং বলেছেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বই সব দেখুক, কে বা কারা কী করছেন। এ নিয়ে আমরা কিছু বলছি না।’’
২০১৭ সালে বিমল গুরুংয়ের থেকে আলাদা হওয়ার সময় থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক অনীতের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা পাহাড়ে সবাই জানেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফর চলাকালীন তিনি একমাত্র পাহাড়ের নেতা, যাঁকে নিয়মিত মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক, বাংলোয় দেখা যায়। বিনয় তামাং বা বিমল গুরুংরাও সেই জায়গায় একবারও পৌঁছাতে পারেননি। রাজ্যের সঙ্গে বরাবর সুসম্পর্ক রেখেই অনীত চলেন। কিন্তু পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বরাবর। বিশেষ করে পাহাড়ের নেতারা বিধানসভায় গুরুংকে সমর্থন করার কথাও বলেছিলেন। পরে বিনয় তামাং তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় অনীতের সঙ্গে পাহাড়ের নেতাদের দূরত্ব আরও বেড়েছে।
মোর্চা সূত্রের খবর, পাহাড়ের নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব তো ছিলই। সম্প্রতি রাজ্যের প্রতিও অনীত কিছুটা অসন্তুষ্ট। অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা, সরকারি কর্মীদের স্থায়ীকরণ, সরকারি শূন্যপদ পূরণ, পাহাড়ের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন, সিঙ্কোনা বাগানের সমস্যা মেটানোর মতো একাধিক দাবি নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে অনীত দাবি জানালেও কাজ হয়নি।
সম্প্রতি একাধিক চিঠি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে লেখেন। ভোট ঘোষণার আগে কিছু দাবি মিটবে বলে আশা করলেও তা হয়নি। তাতে অনীত এবং তাঁর সহকর্মীরা কিছুটা অসন্তুষ্টই বলা যায়। যা ভোটের প্রার্থী, প্রচার এবং রাজ্যের দাবি মধ্যে দিয়ে সামনে এসেছে বলেই পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy