জীবন সিংহ। ফাইল চিত্র।
জীবন সিংহ কি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক জীবনে আবার প্রাসঙ্গিক হতে চাইছেন? তাঁর সাম্প্রতিক ভিডিয়ো বার্তা দেখে এবং যে ভাবে তিনি রাজ্যের শাসকদলকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুষেছেন, তা শুনে এমন কথাই মনে করছেন অনেকে। গোয়েন্দারা আবার মনে করছেন, জীবনের দলে লোক সংখ্যা এতটাই কমে গিয়েছে যে, ভিডিয়ো বার্তা ছাড়া আপাতত উপায় নেই। এই তিনি এক ঢিলে একাধিক পাখি মারার ব্যবস্থা করছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ধারণা, জীবনের জনবল এখন খুবই কম। ভারতের সীমান্তবর্তী মায়ানমারের জঙ্গল এলাকায় তিনি লুকিয়ে আছেন বলেও মনে করা হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় যুবকেরা নেই বলেও গোয়েন্দাদের একাংশের ধারণা। এই পরিস্থিতিতে জীবন নিজের প্রভাব বাড়াতে ভিডিয়ো বার্তা ছাড়ছেন বলেই দাবি। এর ফলে একাধিক কাজ তিনি সারতে পারবেন বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন। প্রথমত, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিনি নিজের বার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন। এর ফলে জাত্যাভিমানকে উস্কে দেওয়া সম্ভব হতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন। দ্বিতীয়ত, তার ফলে পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলায় তাঁর প্রতি সহানুভূতি বাড়বে। বা তাঁর প্রতি যাঁরা সহানুভূতিশীল ছিলেন, তাঁরা নতুন করে সক্রিয় হতে পারেন। এটা সম্ভব হলে নিজের প্রতি জনমত গঠনও সম্ভব হতে পারে জীবনের। তৃতীয়ত, এর ফলে দলে লোকবল বাড়াতে বা অর্থ সাহায্য চাওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা হতে পারে।
গোয়েন্দাদের একাংশ অবশ্য মনে করছে, এর মধ্যেই কোনও একটি অংশের সহানুভূতি পাচ্ছেন জীবন। বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলির কাছ থেকে অর্থের সাহায্য পাওয়াও অসম্ভব নয়। হয়তো অস্ত্রশস্ত্রের সাহায্য পেতে পারেন। এই সব কিছু স্পষ্ট করার জন্য জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। না হলে জীবন গোপন ডেরা থেকে বার্তা পাঠিয়ে রাজ্যের একাংশে শান্তি বিঘ্নিত করতে পারেন বলেও আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।
সংশ্লিষ্ট লোকজনেরা বলছেন, বিধানসভা ভোটের ফল বার হওয়ার পর থেকে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য গড়ার প্রসঙ্গ উঠতে শুরু করে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জীবনের ভিডিয়ো বার্তাও সেই সময়ে বাড়তে শুরু করে। সেই সব বার্তায় তিনি রাজ্য সরকারকে দুষেছেন, শাসকদল তৃণমূল নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তার পরেই গোয়েন্দারা মাঠে নামেন। তদন্তে জানা যায়, তিনি ভারত সীমান্তের কাছে মায়ানমারের কোনও জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে পারেন। এই সময়ে অনন্ত রায় (যিনি মহারাজ বলে পরিচিত) সম্পর্কে সহানুভূতি দেখান জীবন। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, এই ভাবেও প্রান্তিক দুই জেলার নিজের প্রতি সহানুভূতি বাড়াতে চাইছেন জীবন। যদিও অনন্তের সংগঠন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, কেএলও বা জীবনের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
(সহ-প্রতিবেদন: শিবাজী দে সরকার, নমিতেশ ঘোষ, পার্থ চক্রবর্তী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy