Advertisement
০৭ মে ২০২৪

শিক্ষককে ‘হেনস্থা’র জেরে ভাঙচুর ছাত্রদের

শিক্ষক হেনস্থার অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত অফিস ও উপপ্রধানের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোয় অভিযোগ উঠল একদল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে কালচিনি ব্লকের চুয়াপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার দুপুরে। ওই দিন চুয়াপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলে ঢুকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ একাধিক শিক্ষককে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে।

পঞ্চায়েত দফতরে ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত দফতরে ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪২
Share: Save:

শিক্ষক হেনস্থার অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত অফিস ও উপপ্রধানের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোয় অভিযোগ উঠল একদল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে কালচিনি ব্লকের চুয়াপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায়।

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার দুপুরে। ওই দিন চুয়াপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলে ঢুকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ একাধিক শিক্ষককে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। মাঝে রবিবার স্কুল বন্ধ থাকায় সোমবার সকালে বিষয়টি জানতে পারে স্কুলে পড়ুয়ারা। প্রথমে চুয়াপাড়া এলাকায় শিক্ষক হেনস্থার প্রতিবাদে পথ অবরোধে নামে পড়ুয়ারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। দফায় দফায় পঞ্চায়েত অফিসে চলে বিক্ষোভ। বেলা আড়াইটে নাগাদ চুয়াপাড়া পঞ্চায়েত অফিস ভাঙচুর চালায় পড়ুয়ারা। উত্তেজিত পড়ুয়ারা উপপ্রধানের বাড়িতেও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “সোমবার চুয়াপাড়া পঞ্চায়েত ও উপপ্রধানের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি তবে ঘটনার শুরু করা হয়েছে।” জেলা পরিষদের তৃণমূলের সভাধিপতি মোহন শর্মা বলেন, “পঞ্চায়েত অফিস ও উপপ্রধানের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। এটা স্কুল ছাত্রদের কাজ নয়। এর পেছনে কারও উস্কানি রয়েছে। ঘটনাটি পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে হবে।”

চুয়াপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক মসলেউদ্দিন খান জানান, “মাসখানেক আগে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের সাইকেল চুরি যায় স্কুল থেকে। গত শনিবার দুপুরে স্কুল থেকে বেরিয়ে ওই ছাত্রটি দেখে তার সাইকেল চালিয়ে এক যুবক যাচ্ছে। স্কুলপড়ুয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক সুখীরাম রবিদাসকে জানায়। তিনি ওই যুবককে ডেকে সাইকেলটি স্কুলছাত্রকে ফেরত দিতে বলেন। ওই যুবক অসংলগ্ন কথা বলে। পরে চুয়াপাড়ার উপপ্রধান এসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কলার ধরে হেনস্থা করেন।’’ বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কথা বলতে চাননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুখীরাম রবিদাস। মসলেউদ্দিন খান বলেন, “শনিবার উপপ্রধান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কলার ধরে মারধর করেন। সোমবার বিষয়টি নিয়ে আমারা স্কুল পরিদর্শকের কাছে গিয়েছিলাম। সেই সময় জানতে পারি ছাত্ররা এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।”

শিক্ষক হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করে উপপ্রধান সাবির লোহার পাল্টা অভিযোগ করেন, “শনিবার আমাদের গ্রামের একটি ছেলেকে আটকে প্রধান শিক্ষক তাকে সাইকেল চোর অপবাদ দেয়। ওই ছেলেটি অসুস্থ। ঘটনাটি শুনে আমি গিয়েছিলাম। উপ্টে প্রধান শিক্ষক আমার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে। আমাকে বলে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ হবে। আমরা সেখান থেকে চলে আসি। আজ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সঙ্গে আমার বাড়িতেও ভাঙচুর চলে। বাড়িতে মা ও বোনের গায়ে হাত তোলে পড়ুয়ারা।” চুয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান আমাশি নায়েক থান বলেন, “এ দিন আচমকা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এসে স্কুল পড়ুয়ারা উপপ্রধান সাবির আলিকে খুঁজতে থাকে। কয়েক দফায় তারা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ দেখায় পরে অফিসের কম্পিউটার থেকে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। বিষয়টি বিডিওকে জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE