প্রতীকী চিত্র।
মোর্চার আন্দোলনের জেরে পাহাড়ে পড়াশোনা লাটে উঠেছে। শিক্ষাবর্ষের মাঝপথে এমন হওয়ায় অনেক অভিভাবকের রাতের ঘুম উবে গিয়েছে। তাই অনেক মা-বাবাই সমতলে নেমে ছেলেমেয়েকে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার স্কুলে ভর্তি করছেন শিক্ষাবর্ষের মাঝেই। শিলিগুড়ির প্রথম সারির অন্তত ১০টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে গত দু’সপ্তাহের মধ্যে পাহাড়ের হাজারের বেশি পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। সমতলের নেপালি ও হিন্দি মাধ্যমেও চলতি মাসে অন্তত দু’শো জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। এখনও অন্তত দু’হাজার আবেদনপত্র বিবেচনাধীন।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাজার-হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। মোর্চার অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন মেনে আন্দোলন প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসা উচিত। না হলে পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না।’’
স্কুলগুলি জানাচ্ছে, ছেলেমেয়েকে ভর্তি করাতে রোজই গড়ে শতাধিক অভিভাবক উদ্বিগ্ন মুখে ঘোরাঘুরি করছেন। অধিকাংশ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ষান্মাসিক পরীক্ষা হয়। তার আগে ভর্তি করানো না গেলে একটা বছর নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ঝুঁকি নিয়ে অভিভাবকেরা রাতের অন্ধকারে শিলিগুড়িতে নামছেন। কেউ আনছেন গির্জার সুপারিশপত্র, কেউ পুলিশ-প্রশাসনের অনুরোধ। কারও জন্য ফোন করছেন পাহাড়ের স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ি়র একটি হিন্দি ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পরিচালন সমিতির কর্তা জানান, তিনি রোজই গড়ে ৭-৮ জন পাহাড়ের পড়ুয়াকে নানা স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করছেন।
ফলে কিছুটা স্বস্তিতে ভিকি শর্মা, মণীষা ছেত্রীরা। ‘টাউন অব স্কুলস’ কার্শিয়াঙে পড়াশোনার স্বপ্ন ছেড়ে সমতলে এসেছে তারা। এসেছে দার্জিলিঙের মিডল স্কুলের পড়ুয়া উদিত লামা, মাধুরি তামাঙ্গ, খুশি প্রধানরাও। কিন্তু, মাটিগাড়া, দাগাপুর, আড়াই মাইল-সহ শিলিগুড়ির আশেপাশের স্কুলগুলিতে হস্টেল নেই। ফলে, অনেককে শিলিগুড়িতেও ডেরা করার জন্য ধারদেনা করতে হচ্ছে। উদিত, খুশিদের আত্মীয়দের অনেকেই জানান, আপাতত ভাড়া বাড়ি নিচ্ছেন তাঁরা। পরে ঋণ নিয়ে হলেও শিলিগুড়িতেই একটা ফ্ল্যাট কিনে রাখতে চান। সমস্যা হচ্ছিল ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ নিয়েও। একাধিক পাহাড়ি স্কুলের জনসংযোগ আধিকারিক জানান, অনলাইনে পড়ুয়াদের সম্পর্কে সব তথ্য রয়েছে। কোনও অভিভাবক আবেদন করলে, সেই পড়ুয়ার তথ্য যাচাই করে ফোনেই সমতলের স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্কুল খুললে হাতে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এসএমএস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy