উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ, অবস্থান, মিছিল। ছবি: বিনোদ দাস
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়তে জমি হস্তান্তরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ক্যাম্পাস। শুক্রবারই ওই জমির ‘ইউজ়ার রাইট’ হস্তান্তরের প্রস্তাব পাশ হয় কর্মসমিতির বৈঠকে।
এ দিন বৈঠকে প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে জেনে বেলা ১১টা থেকেই ‘উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও মঞ্চ’-এর তরফে শিক্ষক-কর্মী-পড়ুয়া-প্রাক্তনীদের অনেকে জড়ো হন। বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু হয়। প্রশাসনিক ভবনের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার সময় বিক্ষোভ দেখানো হয়। আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিতে চাইলে, তাঁদের গেটে আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। গেট ধরে ঝাঁকাতে থাকেন অনেকে। দরজা ভাঙচুর হয়। প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান-বিক্ষোভ চলে বিকেল পর্যন্ত। এ দিনের আন্দোলনে বেশি শিক্ষক ছিলেন না।
বিকেলে প্রতিবাদসভার পরে মিছিল করে ল-মোড়ে যান আন্দোলনকারীরা। সেখানেও সভা হয়। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, কর্মসমিতির যে সদস্যেরা প্রস্তাব পাশ করেছেন, তাঁদের বাড়ির সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ হবে। কর্মসমিতির ‘নীরব’ শিক্ষক প্রতিনিধিদের ক্লাস বয়কটের আহ্বানও জানানো হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষে প্রাক্তনী তথা আইনজীবী অলকেশ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘যে সংস্থাকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়তে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, তাদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন ‘ইউজ়ার রাইট’ হস্তান্তর হচ্ছে। এই চক্রান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি।’’ মঞ্চের তরফে শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘কথা বলতে এসেছিলাম। যে ভাবে আটকে দেওয়া হল, তা ঠিক নয়। উদ্দেশ্য সৎ হলে, ওঁরা কথা বলতেন।’’
এ দিন বৈঠকের তিন নম্বর ‘অ্যাজেন্ডা’য় ছিল হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়তে ক্যাম্পাসের পাঁচ একর জায়গার ‘ইউজ়ার রাইট’ হস্তান্তরের প্রস্তাব। উপস্থিত ১৩ জন সদস্যের মধ্যে একমাত্র কলা, বাণিজ্য এবং আইন বিভাগের ডিন রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেন। উপাচার্য বলেন, ‘‘বাকি সবার মত নিয়েই প্রস্তাব পাশ হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এই জমির মালিকানা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেই থাকছে। কোনও হোটেলও গড়া হচ্ছে না। বেসরকারি কোনও সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের মন্ত্রিসভায় ওই প্রতিষ্ঠান গড়ার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জমির ‘ইউজ়ার রাইট’ হস্তান্তরের কথা জানানো হয়েছে।’’
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেন্টার অব ফ্লোরিকালচার অ্যান্ড এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট’-এর জায়গা ‘পিপিপি’ মডেলে বেসরকারি সংস্থাকে ব্যাবহারের সুযোগ দিতে ‘মউ’ সইয়ের প্রস্তাবও ছিল। উপাচার্য জানান, বিষয়টি নিয়ে সার্বিক মত মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy