বৃষ্টির পরে তিস্তা ব্যারাজের জল ছাড়ার ফলে জলমগ্ন মাল মহকুমার বাসুসোবা। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নদীর জল বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল মালবাজার, ময়নাগুড়ি, রাজগঞ্জের কয়েকটি গ্রাম।আচমকাই বাঁধের জল ছাড়ায় তিস্তা নদীর দুই চরে বানভাসি অবস্থার সৃষ্টি হল। মঙ্গলবার রাত থেকেই তিস্তায় জল বাড়তে থাকে।
এর জেরে রাত দশটার থেকেই মালবাজার, ময়নাগুড়ি এবং রাজগন্জ ব্লকের বেশকিছু গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীর চর লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করে। এই এলাকার টাকিমারি গ্রামে নদী লাগোয়া কৃষিজমিতে জল ঢুকে বাদাম চাষের ব্যাপক ক্ষতিও হয়ে যায়। সেই সঙ্গে লঙ্কা, ঝিঙ্গে, ঢ্যাঁড়শের মত সব্জি খেতেও জল ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
মালবাজার এবং ময়নাগুড়ি ব্লকের সংযোগস্থলে থাকা চাপাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত ময়নাগুড়ির দোমহনি ১নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে জল ঢুকে যায়। এই এলাকার প্রায় ছয় শতাধিক বাড়িতে হাঁটু জলেরও বেশি জল দাড়িয়ে পড়ে। শতাধিক বিঘা কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে যান ময়নাগুড়ির বিডিও শ্রেয়সী ঘোষ। বাসুসুবা, চাত্রার পাড়, দাস পাড়া, বর্মন পাড়া এলাকার মানুষেরা গত বছরেও তিস্তার জলে প্লাবিত হয়েছিলেন। এ বার বর্ষা আসার আগেই ফের তিস্তার জল চলে আসায় প্রমাদ গুণেছেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের কথায় একটা বছর পার হয়ে গেলেও পরিস্থিতির যে কোনই পরিবর্তন হল না, তা এ দিনের জল ঢুকে পড়ার ঘটনাতেই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। তবে বানভাসি পরিস্থিতির জন্যে পাহাড়ি গত দু’দিনে হওয়া প্রচুর বৃষ্টিকেই দায়ি করা হয়েছে। সে কারণেই এনএইচপিসি কালীঝোরার বাঁধ কর্তৃপক্ষ গত সোমবার রাত থেকে জল ছাড়া শুরু করে। এর জেরে গজলডোবার তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকেও জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
গজলডোবা তিস্তা ব্যারাজের নির্বাহী বাস্তুকার সুমিলন ঘোষ বলেন, ‘‘পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে জল বেড়ে যাওয়াতেই কালীঝোরার বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদেরও তাই জল ছাড়তে হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটা থেকে গড়ে ঘন্টায় ১১০০ কিউমেক করে জল ছাড়া হয়।’’ কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই ফের তিস্তায় জল কমতে শুরু করলে জল ছাড়াও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মুহুর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy