শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর লাগাতার বোমাবাজি ও সন্ত্রাসের জেরে সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন মালদহের চাঁচলের হজরতপুর-জালালপুর এলাকার বাসিন্দারা।
সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজির পর রাতে তৃণমূলের এক সদস্যার বাড়ি লক্ষ করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে বিপক্ষের বিরুদ্ধে। এক মাসের ব্যবধানে দু’বার মুড়িমুড়কির মতো বোমাবাজি এমনকি গুলির লড়াইয়ের জেরে গোটা এলাকাই থমথমে হয়ে রয়েছে। জালালপুরে একটি হাই স্কুল ও দুটি মাদ্রাসা সহ তিনটি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মাদ্রাসা দুটি খোলা থাকলেও ভয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না অভিভাবকরা। বন্ধ হয়ে রয়েছে জালালপুরের সমস্ত দোকানপাটও। ফের যে কোনও সময় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের আশঙ্কায় বাসিন্দারা ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি এত বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে আসছে, তা উদ্ধার করতে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সেই প্রশ্নও উঠেছে। চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোথা থেকে বোমা আসছে তা ও পুলিশ ক্যাম্পের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি হবিবুর রহমান ও প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি ইমদাদুল হকের গোষ্ঠীর মধ্যে মূলত এলাকা দখলে রাখতেই বিবাদের সূত্রপাত। জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮ জন কংগ্রেসী সদস্যই তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এখন তা তৃণমূলের দখলে। এদের মধ্যে বর্তমান প্রধান বাশেদ আলি সহ ১২ জন সদস্য ইমদাদুল হকের পক্ষে থাকায় তাদের পাল্লা ভারী। কিন্তু গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাঁচল-২ ব্লকের সভাপতি হন হবিবুর রহমান। প্রাক্তন প্রধান আব্দুল আহাদ তার পক্ষে যোগ দেওয়ার পর ক্ষমতা দখলে রাখতে দুপক্ষ আসরে নামতেই সংঘর্ষের শুরু। ১৭ সেপ্টেম্বর সংঘর্ষে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে দুই স্কুলছাত্রী সহ পনেরো জন বোমার আঘাতে জখম হন। তারপর একমাসের মাথায় গত ১৭ অক্টোবর রাত থেকেও ফের দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজি ও গুলির লড়াইয়ে এলাকা জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
যদিও ব্লক তৃণমূল সভাপতি হবিবুর রহমানের অভিযোগ, ‘‘সামান্য ছুতোয় এমনকি ব্যক্তিগত সমস্যা হলেও ওরা আমাদের লোকজনকে আক্রমণ করছে।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ইমদাদুল হকের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কোনও এলাকায় গন্ডগোল হলেই বলা হয় যে জালালপুর থেকে দুষ্কৃতীরা এসে করেছে। দুষ্কৃতীদের আখড়া জালালপুর থেকে আমি সে সব দূর করতে প্রতিবাদ করছি বলে আমাকেই এলাকা ছাড়া করতে এসব করা হচ্ছে।’’ এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘‘এখন সব কিছুই শাসকদলের দখলে। কিন্তু এলাকা নিজেদের দখলে রাখতে নিত্য দিনের অশান্তিতে আমাদের রাতের ঘুম উবে গিয়েছে। ফলে পুলিশ ক্যাম্প জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy