‘নোটবন্দি’র কথা পাড়তেই ‘মুংলি, মেরি মুংলিরে’ বলে কান্না জুড়ে দেন বুধিয়া ওঁরাও। গত নভেম্বরে নোটবন্দির জেরে নকশালবাড়ির প্রত্যন্ত এলাকার চা বাগানের শ্রমিক বুধিয়াদের মজুরি বিলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে বাগানই বন্ধ হয়ে যায়। সংসারের খরচ তুলতে গোয়ালের গরু ‘মুংলি’কে মাটিগাড়া হাটে বেচে দিতে হয়েছিল তাঁকে।
মাঞ্ঝা বাগানের কল্পনা কুল্লু, মাতিলদা তিরকের মতো চা শ্রমিকরা আবার এখন ব্যাঙ্ক, এটিএমের নাম শুনলেই পালাতে চান। ওঁদের নামে খোলা অ্যাকাউন্টে ৬-৭ লক্ষ টাকার লেনদেন করা হয়েছে। ব্যাঙ্কের তরফে চিঠি পাওয়ার পরে ওঁরা প্রথমে মাথায় হাত দিয়েছিলেন। গড়পরতায় রোজ ১৩২ টাকার হাজিরা পাওয়া মাতিলদারা কোনও দিন ভাবতেও পারেননি, অ্যাকাউন্টে লাখ টাকা জমবে। তাই পঞ্চায়েতকে ধরাধরি করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন।
কিন্তু, আজও সেই মামলা চলছে। কে লেনদেন করেছিল বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও তথ্যই সামনে আসেনি। পুলিশ, ব্যাঙ্ক— সবাই ‘বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য নয়’ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। তাই মাতিলদা, কল্পনারা বলেন, ‘‘মালিকের কাছে হাত জোড় করে বলেছি, ব্যাঙ্ক-এটিএম নয়, সাপ্তাহিক মজুরি হাতেই দিতে হবে।’’