Advertisement
১১ মে ২০২৪

কোটি টাকার হিসেব নেই, হয়নি বৈঠকও

প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছে কোথায়? তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নিয়ে বৈঠক হয়নি আজও। সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত ক্লাসঘর তৈরি, পঠনপাঠনের সরঞ্জাম কেনার জন্য শিলিগুড়ির প্রাথমিক এবং হাইস্কুল কর্তৃপক্ষকে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৫
Share: Save:

প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছে কোথায়? তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নিয়ে বৈঠক হয়নি আজও। সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত ক্লাসঘর তৈরি, পঠনপাঠনের সরঞ্জাম কেনার জন্য শিলিগুড়ির প্রাথমিক এবং হাইস্কুল কর্তৃপক্ষকে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ওই টাকার হিসেব মেলেনি। সেই সংক্রান্ত বৈঠকও ডাকা হচ্ছে না। ফলে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পের দফতরের বিরুদ্ধেই।

সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রয়োজনের ভিত্তিতে প্রতি বছর এই টাকা বরাদ্দ করা হয়। সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাসে প্রকল্পের বৈঠকে পেশ করা রিপোর্টে ২০১০-১১ আর্থিক বছর থেকে বরাদ্দ টাকার মধ্যে ৩ কোটি ৩২ লক্ষ টাকার খরচের হিসেবে গরমিল থেকে গিয়েছিল। সেই বৈঠকেই স্থির হয়, কোনও খাতে অব্যবহৃত টাকা পড়ে থাকলে দ্রুত তার হিসেব তৈরি করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নিয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক হবে। আড়াই মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও সে বৈঠক হয়নি।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকল্পের একটি বৈঠকের রিপোর্টে জানা যায়, ২০১০-১১ আর্থিক বছর থেকে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে বরাদ্দ হওয়া প্রায় ৭০ কোটি টাকার কোনও হিসেব নেই। এর মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নির্মাণ সংক্রান্ত কাজে বরাদ্দ ছিল। বিপুল অঙ্কের ওই হিসেব না মেলায় প্রকল্পের দফতরের অন্দরেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়। খবর পৌঁছয় জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের কাছে। দফতরের তরফে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, অনেক ক্ষেত্রে নির্মাণ কাজ হয়ে যাওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ খরচের হিসেব দাখিল করেনি। তার জেরেই হিসেব মিলছে না। দ্রুত স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে খরচের হিসেব চাওয়া হয়। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায় মাত্র ৬৬ কোটি টাকার খরচের হিসেব জমা পড়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, ৪০ জন পড়ুয়া পিছু একটি করে ক্লাসঘর থাকে। পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি হলে অতিরিক্ত ক্লাসঘর তৈরির জন্য বরাদ্দ করা হয়। এ ছাড়াও শৌচাগার, খেলার ঘর-সহ নানা ধরনের নির্মাণ, বেঞ্চ, বই, খাতা-পেন সহ পড়ুয়া পিছু আরও নানা খাতে টাকা বরাদ্দ হয়। তার বিস্তারিত খরচের হিসেব জমা দেওয়ার কথা। অনেক ক্ষেত্রে বরাদ্দ হওয়া টাকা মাঝপথেই লোপাট হয়ে যায় বলে অভিযোগ।

দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের কাছেও এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা পড়েছে। তিনি দ্রুত যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন। এ দিন জেলাশাসক বলেন, ‘‘আগে থেকেই দুর্নীতি নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়। রিপোর্ট পাওয়ার পরে বলব।’’ শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনকে দ্রুত বৈঠক ডাকতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

crore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE