শিশু পাচার কাণ্ডে এ বার জড়াল চা বাগান এলাকার তিন চিকিৎসকের নাম। জলপাইগুড়ির হোমের নথিপত্র পরীক্ষার করে সিআইডি জেনেছে, এমন কিছু শিশুর নাম রয়েছে যাদের কোনও সরকারি রেকর্ড নেই। নিয়ম অনুযায়ী কোনও শিশুকে দত্তক দিতে হলে কেন্দ্রীয় সংস্থার ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে তথ্য উল্লেখ করতে হয়। জলপাইগুড়ির হোম থেকে এমন অন্তত ২০টি শিশুর দত্তক দেওয়ার কাগজ মিলেছে, যাদের কোনও তথ্যই সরকারকে জানানো হয়নি। এই শিশুরা এল কোথা থেকে, তার খোঁজ করতেই সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে চার চিকিৎসকের নাম। দু’টি নার্সিংহোম সম্পর্কেও খোঁজখবর করছে সিআইডি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া কয়েকটি এলাকায় নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির চালানো হতো কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে। ওই শিবিরগুলিতে নিয়মিত দেখা যেত তিন চিকিৎসককে। তাঁদের দু’জন জেলার দু’টি চাবাগানের সঙ্গে যুক্ত। অন্য চিকিৎসকের একটি ক্লিনিক রয়েছে শহর লাগোয়া একটি হাটে। চিকিৎসা শিবির থেকে ওষুধ বিলি করা হতো। সেখানেই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের কম খরচে অথবা নিখরচায় প্রসব করানোর টোপ দিয়ে হোমে নিয়ে আসা হতো বলে অভিযোগ। দু’টি নার্সিংহোমে ওই মহিলাদের প্রসব করানো হতো। তার মধ্যে একটি জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া এলাকায়, অন্যটি ডুয়ার্সের। সেগুলোর যথাযথ সরকারি অনুমোদন রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তদন্তকারীরা। কিন্তু প্রসবের পর শিশু পাচার হতো কী ভাবে?
অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে পরিবারকে জানানো হতো মৃত সন্তান প্রসব হয়েছে। সদ্যোজাতের যে মৃত্যু হয়েছে, তা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিত কয়েকজন চিকিৎসক। কিছু ক্ষেত্রে আবার প্রসবের পরে পরিবারকে বড় মাপের বিল ধরিয়ে দেওয়া হতো। সেই টাকা মকুব করে দেওয়ার শর্তে সদ্যোজাতদের নিজেদের হেফাজতে রেখে দিত সংস্থা। এই ধরনের শিশুদের জলপাইগুড়ির হোমে পাঠানো হতো বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান। চিকিৎসকদের এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে জেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিআইডি।
জলপাইগুড়ির শিশু পাচার কাণ্ডে ধৃত চন্দনা চক্রবর্তীর আইনজীবী গৌতম পালের কথায়, ‘‘যে শিশুদের দত্তক দেওয়া হয়েছে। তার সব নথি রয়েছে। নথি দেখেই সরকারি আধিকারিকরা সই করেছেন। এর বেশি কিছু বলার নেই। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ার আগে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy