Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

প্রার্থীদের সম্পত্তির খতিয়ানে এগিয়ে তৃণমূল

শিলিগুড়ি পুরভোটে প্রার্থীদের মধ্যে বিষয় সম্পত্তির খতিয়ানে এগিয়ে রয়েছেন কৃষ্ণ পাল, নান্টু পাল, রঞ্জন শীলশর্মার মতো তৃণমূলের নেতারা। সম্পত্তির পরিমাণে পিছিয়ে নেই বিজেপি’র সবিতা অগ্রবালও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২১
Share: Save:

শিলিগুড়ি পুরভোটে প্রার্থীদের মধ্যে বিষয় সম্পত্তির খতিয়ানে এগিয়ে রয়েছেন কৃষ্ণ পাল, নান্টু পাল, রঞ্জন শীলশর্মার মতো তৃণমূলের নেতারা। সম্পত্তির পরিমাণে পিছিয়ে নেই বিজেপি’র সবিতা অগ্রবালও।

কৃষ্ণ পাল যে বিষয় সম্পত্তির কথা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তাতে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে তাঁর ৩ কোটি ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার সম্পত্তি রয়েছে বলে দাবি। তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ কৃষ্ণবাবুর নামে ৩১ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৭৬ টাকা এবং তাঁর স্ত্রীর নামে ৩৫ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা। কৃষ্ণবাবুর মেয়ের নামে রয়েছে ৭ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার সম্পত্তি। কৃষ্ণবাবুর হাতে নগদ রয়েছে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর কাছে রয়েছে ১৮ লক্ষ টাকা। ৪ লক্ষাধিক টাকা দিয়ে কেনা তাঁর একটি ছোট গাড়ি রয়েছে। স্ত্রীর হয়েছে ৬০ হাজার টাকার একটি স্কুটি। কৃষ্ণবাবুর কাছে ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর কাছে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার গয়না রয়েছে। কৃষ্ণবাবুর ৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা, স্ত্রীর ২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা রয়েছে।

রাজগঞ্জের যুগ্নুভিটাতে কৃষ্ণবাবুর স্ত্রীর নামে সাড়ে ৫ একর জমি রয়েছে। ২০০৬ সালে কেনা ওই জমির বর্তমান বাজার দর দেখানো হয়েছে ১কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। কৃষ্ণবাবুর নামে ভারতনগর, সাহুডাঙি, ভক্তিনগরের ৫টি এলাকায় জমি রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার মতো। মাটিগাড়ার পরিবহণ নগরে কৃষ্ণবাবুর একটি বাণিজ্যিক জায়গাও রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি টাকা।

প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা এসজেডিএ’র বোর্ড সদস্য নান্টুবাবু এবং তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী দেবী দু’জনেই প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের। নান্টুবাবুর ১২ নম্বর এবং স্ত্রী মঞ্জুশ্রী দেবী ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন। নান্টুবাবুর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭৪ লক্ষ টাকা বলে দাবি করেছেন। স্ত্রীর নামে রয়েছে আরও ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার সম্পত্তি। তার মধ্যে নান্টুবাবুর হাতে রয়েছে নগদ ৭৫ হাজার টাকা। স্ত্রীর হাতে ১০ হাজার। নান্টুবাবুর মেয়ের হাতে রয়েছে প্রায় ৪২ হাজার টাকা। নান্টুবাবুর ৬ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার মতো। স্ত্রীর পাঁচটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে একটি স্কুটার রয়েছে। মূল্য ৫১৭৩৪ টাকা। নান্টুবাবুর একটি হোটেল রয়েছে। নান্টুবাবু, স্ত্রী এবং মেয়ের নামে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার গয়না রয়েছে। বিধান মার্কেটে পূজা কমিউনিকেশন, ইলেক্ট্রিক্যাল এম্পোরিয়াম নামে দু’টি দোকান রয়েছে নান্টুবাবুর। ওই দু’টি দোকানের ক্ষেত্রে আর এক শরিকি রয়েছে বলে নান্টুবাবুর দাবি। শিমুলগুড়ি এলাকায় ১.১৬ একর জমি রয়েছে স্ত্রীর নামে। বর্তমানে যার বাজার দর ২ লক্ষ টাকা বলে দাবি করেছেন। নান্টুবাবুর নামে মাল্লাগুড়ি, সুখানি এলাকায় ৮ কাঠা এবং ১ বিঘা জমি রয়েছে। মাল্লাগুড়ির জমিতে একটি হোটেল রয়েছে, যার নির্মাণ খরচ ৬২ লক্ষ টাকা। নান্টুবাবুর দাবি, তাঁর প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকার মতো ঋণ রয়েছে। স্ত্রীর নামে মাল্লাগুড়িতে ৩ কাঠা জমি রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বলে তিনি দাবি করেছেন। কিন্তু ওই এলাকায় জমির দাম নান্টুবাবু যা দেখিয়েছেন তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি বলে সরকারি ভাবেই জানা গিয়েছে।

অন্য দিকে, রঞ্জনবাবু যে হলফনামা দিয়েছেন তাতে ১৭ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৮১ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি কথা জানিয়েছেন। স্ত্রীর নামে ১১ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৯০ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে দাবি। তার মধ্যে রঞ্জনবাবুর হাতে নগদ রয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। স্ত্রী’র হাতে ২ লক্ষ টাকা। স্ত্রীর নামে ২০০ গ্রাম এবং রঞ্জনবাবুর নামে ৫০ গ্রাম অলঙ্কার রয়েছে। রঞ্জনবাবুর একটি বাড়ি রয়েছে ডাবগ্রাম এলাকায়। তাঁর স্ত্রীর নামে ঘোঘোমালি এলাকায় একটি বসত জমি রয়েছে। ২০১৩ সালে ১২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে সেটি কেনা হয়েছে। বর্তমানে তার বাজার দর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। ডাবগ্রামের রবীন্দ্রসরণিতে তাঁর যে বাড়ি রয়েছে, তার বাজার দর ৫০ লক্ষ টাকা। তবে একটি ব্যাঙ্কে বাড়ি তৈরির জন্য তার ৯ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার মতো ঋণ রয়েছে। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রঞ্জনবাবুর ফাটাপুকুর এলাকায় ৮.৮ একর জমি এবং ফারাবাড়ি এলাকায় ১ একর জমি রয়েছে। ফাটাপুকুর এলাকার জমির বর্তমান বাজার মূল্য তিনি দেখিয়েছেন ৯ লক্ষ টাকা। ওই জমির মূল্য বাস্তবে অনেক বেশি বলে রাজগঞ্জ ব্লক প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সবিতা অগ্রবালের হলফনামা অনুসারে তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৬১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৯২৩ টাকার। গয়না রয়েছে ১০ লক্ষ টাকার। তার স্বামী গোবিন্দবাবুর নামে রয়েছে ১ লক্ষ টাকার গয়না। সবিতাদেবীর হাতে রয়েছে নগদ ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। তাঁর স্বামীর কাছে রয়েছে ৭০ হাজার ৫০০ টাকা। বন্ড, ডিবেঞ্চার, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ডের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবিতাদেবীর নামে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, তাঁর স্বামীর নামে ১৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার মতো বিনিয়োগ করা রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবিতাদেবীর ১৪ লক্ষ টাকার মতো ঋণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তার মধ্যে চা কোম্পানির জন্য ৬ লক্ষ এবং রিয়েল এস্টেটের জন্য ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ। সবিতাদেবীর স্বামীর নামে ভিমভার এলাকায় ১.৮৩ একর জমি রয়েছে। যার বর্তমান বাজার দর ২০ লক্ষ টাকা বলে তারা দাবি করেন। ডাবগ্রামে বসুন্ধরা আবাসন প্রকল্পে গোবিন্দবাবুর জমি রয়েছে। পরিমাণ ৮৩.৭৮ বর্গ মিটার। যার বর্তমান দর ১০ লক্ষ টাকা বলে দাবি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE