Advertisement
২০ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

তৃণমূলের পথে ‘কাঁটা’ দলের পুরনো নেতাই

‘নব্যেরাই’ দলের প্রথম সারিতে চলে আসেন, পিছিয়ে পড়েন পুরনোরা। বিজন ২০১৩ সালে দলের টিকিট না পেয়ে, নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ান।

 বৃষ্টি থামতেই প্রচার। সিপিএমের পতাকা লাগাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। আলিপুরদুয়ােরর ঘাঘরা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি থামতেই প্রচার। সিপিএমের পতাকা লাগাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। আলিপুরদুয়ােরর ঘাঘরা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ০৮:৫৩
Share: Save:

পাকা সড়কের ধার ঘেঁষে ছোট্ট বাড়ি। বৃষ্টি হলে জল জমে উঠোনে। ঘরে পলেস্তরা খসে পড়ছে। সেখানে থাকেন বিজন গোস্বামী। বয়স পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়েছেন। নির্দল হয়ে ভোটে জিতেছেন। এ বার সংরক্ষণের ‘গেরোয়’ নিজে না দাঁড়িয়ে স্ত্রী দোলা চক্রবর্তীকে এনেছেন ময়দানে। কিন্তু এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, আসলে লড়ছেন বিজন নিজে, যা তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পথে ‘কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোচবিহার শহর ঘেঁষে গুড়িয়াহাটি ২ নম্বর অঞ্চল। ওই অঞ্চলের ৮/১৬৪ নম্বরে বুথেই দুই জায়ের লড়াই। শুধু তাঁরা নয়, সেখানে বামেদের হয়ে ময়দানে রয়েছেন চন্দ্রাণী মহন্ত। বিজেপির প্রতীকে চিত্রা মহন্ত। ওই অঞ্চল তৃণমূলের দখলে রয়েছে। এ বার কী হয়, তা দেখার অপেক্ষা।

বিজনের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল এ বারেও আমাকে আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু টিকিট মেলেনি। তাই স্ত্রী নির্দল প্রার্থী হয়েছেন।’’ বিজনের দাবি, দল ক্ষমতায় আসার পরে, বাম ও কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগদান শুরু হয়। ‘নব্যেরাই’ দলের প্রথম সারিতে চলে আসেন, পিছিয়ে পড়েন পুরনোরা। বিজন ২০১৩ সালে দলের টিকিট না পেয়ে, নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ান। জিতেও যান। তখনই তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাঁকে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ফের তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৮ সালেও দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে ভোটে লড়েন বিজন। কিন্তু মাত্র ৯ ভোটে হেরে যান। বিজন বলেন, ‘‘এক বিন্দু দুর্নীতি করিনি। এখন অনেক দুর্নীতির কথা শুনি। তাতে আরও হতাশ হই।’’ দোলা বলেন, ‘‘প্রচারে স্বচ্ছতার সঙ্গেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছি।’’

বিজনের বাড়ির কাছেই তৃণমূল প্রার্থী সোমা চক্রবর্তী রায়ের বাড়ি। সোমার স্বামী শঙ্কর বিজনের পিসতুতো ভাই। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল যাঁরা করেন, তাঁরা আমার সঙ্গেই আছেন। আর মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন।’’ শঙ্কর বলেন, ‘‘দুর্নীতি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা আমরা বলছি।’’ তবে তৃণমূলের একাংশের দাবি, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ব্যক্তি বিজনকে লোকে এক ডাকে চেনে। পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় ভোটে সে ভাবমূর্তির প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।’’

এই পরিস্থিতিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাম ও বিজেপি। বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর বক্তব্য, ‘‘ওই বুথে তৃণমূল নিজেদের দ্বন্দ্বে জর্জরিত। যা আমাদের পক্ষে ভাল।’’ বাম শিক্ষক-নেতা মৃণাল মহন্তও বলেন, ‘‘ ওই আসনে পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে অনুকূল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE