Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ঝুলে থাকা তারে ফের মৃত্যু, বিক্ষোভ

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক ট্রাক্টর চালকের মৃত্যুকে ঘিরে তেতে উঠল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভবানীপুর এলাকা। গত এক বছরে ঝুলে পড়া ১১ হাজার ভোল্টের ওই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একাধিক বার দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।

মৃত্যুর প্রতিবাদে হরিশ্চন্দ্রপুরে রাজ্য সড়ক অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

মৃত্যুর প্রতিবাদে হরিশ্চন্দ্রপুরে রাজ্য সড়ক অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৬ ০২:১৩
Share: Save:

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক ট্রাক্টর চালকের মৃত্যুকে ঘিরে তেতে উঠল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভবানীপুর এলাকা। গত এক বছরে ঝুলে পড়া ১১ হাজার ভোল্টের ওই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একাধিক বার দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। তার পর এ দিন ট্রাক্টরের সঙ্গে ওই তারের সংস্পর্শে এক চালকের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম মহম্মদ ইনসান (১৯)। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুরের খিদিরপুর এলাকার বাসিন্দা।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সারা শরীর পুড়ে গিয়েছে আরও এক চালকের। তাঁকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই ঘটনার পর বিদ্যুত বন্টন কোম্পানির হেলদোল নেই বলে অভিযোগ তুলে তুলসিহাটা-ভালুকা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বাসিন্দারা। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা ধরে বাসিন্দাদের বিক্ষোভে নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। পরে পুলিশ গিয়ে দু’দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তোলেন বাসিন্দারা।

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির হরিশ্চন্দ্রপুরের স্টেশন ম্যানেজার দেবাশিস ভট্টচার্য অবশ্য দাবি করেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। তা ছাড়া আমাদের কেউ সমস্যার কথা জানায়ওনি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃতের বাড়ি বিহারের আমদাবাদ থানার ত্রিমোহিনী এলাকায়। হরিশ্চন্দ্রপুরের বাংরুয়া থেকে নয়াটোলা পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। সেই রাস্তায় মিটির কাজের জন্য ঠিকাদারের অধীনে ট্রাক্টর চালাতেন ইনসান। ভবানীপুরে অন্যদের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। এ দিন দুপুরে ট্রাক্টরের যন্ত্রাংশে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় দুই চালক মিলে মেরামতির কাজ করছিলেন। চালকের আসনে ছিলেন ফিরোজ খান। ইনসান নীচে বসে যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করছিলেন। ওই সময় হাইড্রলিক প্রেসারে ট্রাক্টরের ট্রলিটি কিছুটা উপরে তুলতেই বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে ট্রাক্টরটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান নীচে বসে থাকা ইনসান। বাসিন্দারা শুকনো বাঁশ দিয়ে ট্রলি থেকে তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফিরোজকে উদ্ধার করেন। তাঁর শরীরও ঝলসে যায়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে ওই তারটি ঝুলে পড়েছে। বালির ট্রাক খালি করার সময় আগেও এক চালক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। যদিও সে বার তিনি বেঁচে যান। বাড়ির ছাদ ঢালাই করতে গিয়ে ও পাট শুকোতে গিয়েও দুই ব্যক্তির তড়িদাহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। বাসিন্দারা একাধিকবার ওই তারটি সরিয়ে উঁচু করার দাবি জানালেও বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। এ দিনের দুর্ঘটনার পর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বাসিন্দারা।

এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আজম, জসিমুদ্দিন আহমেদরা বলেন, ‘‘দু’দিনের মধ্যে সমস্যা না মিটলে আরও বড় আন্দোলন হবে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি দেবাশিস দাস বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electrocution death tractor driver malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE