Advertisement
E-Paper

পথ রোখা মিছিলে পুলিশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ শীর্ষক কর্মসূচি পালনের জন্য জাতীয় সড়কের একাংশ বন্ধ করে খুদে স্কুল পড়ুয়া-সহ নিত্যযাত্রীদের ৪ ঘণ্টা দুর্ভোগে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৬
বাড়ি কখন পৌঁছব...। স্কুলবাসে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত খুদে। শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

বাড়ি কখন পৌঁছব...। স্কুলবাসে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত খুদে। শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ শীর্ষক কর্মসূচি পালনের জন্য জাতীয় সড়কের একাংশ বন্ধ করে খুদে স্কুল পড়ুয়া-সহ নিত্যযাত্রীদের ৪ ঘণ্টা দুর্ভোগে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা প্রায় ৪টে পর্যন্ত এমনই দৃশ্যের সাক্ষী ছিলেন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রীরা। যেখানে জাতীয় সড়কে অবরোধ করলে পুলিশ মামলা দায়ের করে, সেখানে তাঁরাই কী ভাবে সে কাজ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে মিছিল করার কারণেই পুলিশ কত মামলা করেছে আমাদের নামে। এ বার পুলিশ জাতীয় সড়ক বন্ধ করে নিজেরা মিছিল করল। ওদের উচিত নিজেদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা।’’ শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও ক্ষুব্ধ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পুলিশের থেকে যে আচরণ সকলে প্রত্যাশা করে, তার উল্টো ভূমিকাই এ দিন দেখা গিয়েছে।’’

শুক্রবার বেলা প্রায় সাড়ে ১১টা থেকে মাটিগাড়া থেকে শিলিগুড়ির দিকে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়। গাড়িগুলিতে খাপরাইল মোড় অথবা মেডিক্যাল মোড়ের বিকল্প পথ দিয়ে যাতায়াত করতে বলা হয়। দু’টি রাস্তাই অপ্রশস্ত। যাত্রী-পণ্যবাহী গাড়ির চাপে আধ ঘণ্টার মধ্যেই দু’টি রাস্তায় তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে। বিকল্প পথও বন্ধ হয়ে যায় বলে গাড়ি চালকদের দাবি। মাটিগাড়া হরসুন্দর স্কুলের সামনে মোড়ে গার্ডরেল বসিয়ে পুলিশের ব্যারিকেডের থেকে গাড়ির লাইন লম্বা হতে হতে আধ ঘণ্টাতেই শিবমন্দির পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যত সময় গড়িয়েছে গাড়ির লাইনও বেড়েছে।

দার্জিলিং মোড়েও বসানো হয় ব্যারিকেড। শিলিগুড়ি থেকে মাটিগাড়ার দিকে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের পর কিছু ছোটগাড়ি এবং বাইক যেতে দেয় পুলিশ। দার্জিলিং মোড়েও গাড়ির লাইন লম্বা হতে থাকে। পণ্যবাহী গাড়ি আটকানো শুরু হয় মহানন্দা সেতু লাগোয়া হিলকার্ট রোডেই। যার জেরে যানজট ছড়িয়ে পড়ে শিলিগুড়ি শহরেও।

এ দিন দুপুর একটায় শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির পুলিশ কমিশনারেট থেকে মিছিল বের হবে বলে কথা ছিল। জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয় সকাল সাড়ে ১১টা থেকে। এ দিকে, দুপুর একটা বেজে গেলেও মন্ত্রী-অতিথিরা না আসায় মাল্লাগুড়ির পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠানও শুরু হয় দেরিতে। চড়া রোদ মাথায় নিয়ে দেড় ঘণ্টা মাঠে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাতে হয় মিছিলে হাঁটতে আসা পড়ুয়াদের। তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সঙ্গে থাকা শিক্ষকদের একাংশ। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ মিছিল শুরু হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘মাটিগাড়া থেকে দার্জিলিং মোড় পর্যন্ত জাতীয় সড়ক একমুখী করা হয়েছিল। তাতে দুর্ভোগ হওয়ার কথা নয়। তবে অনেক সময় ভাল কাজের জন্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতেই হয়।’’

ফলে, অন্তত ১৫টি স্কুলের প্রায় চল্লিশটি স্কুলবাস বিভিন্ন এলাকায় যানজটে আটকে পড়ে। উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের এসএমএস পাঠিয়ে জানান, পড়ুয়াদের ফিরতে দেরি হবে। স্কুল ছুটির সময় সড়ক বন্ধ রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবও। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে এ ভাবে যানবাহন বন্ধ রাখা যায় না। ওই সময় জাতীয় সড়ক দিয়ে স্কুলবাসগুলি শহরে ঢোকে এ কথা পুলিশের মাথায় রাখা উচিত ছিল।’’

মিছিলে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং অনগ্রসর কল্যাণ মন্ত্রী জেমস কুজুর। অনুষ্ঠান শুরুর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবিবাবু বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা ঠিক নয়। পুলিশকে বলছি।’’

siliguri traffic congestion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy