Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ধরা পড়া চিতাবাঘ আর নয় জঙ্গলে

চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘের আস্তানা গেড়ে থাকা নতুন কোনও ঘটনা নয়। বিশেষ করে সন্তান প্রসবের সময় স্ত্রী চিতাবাঘেরা চা বাগানের বিভিন্ন নালায় আশ্রয় নেয়। চা বাগান এলাকা থেকেই হাঁস-মুরগি সহ ছোটখাটো শিকার তারা সংগ্রহ করে৷ কিন্তু চা বাগানে এই আস্তানার ফলে চিতাবাঘের সঙ্গে মানুষের সংঘাতের সম্ভাবনাও এই সময় অনেকটাই বেড়ে যায় বলে জানান বনকর্মীরা।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ।—ফাইল চিত্র।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ।—ফাইল চিত্র।

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০৮
Share: Save:

চা বাগান এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া চিতাবাঘকে এ বার আর জঙ্গলে ফেরানো হবে না। বরং তাদের আস্তানা হবে রেসকিউ সেন্টার বা উদ্ধার কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার বন দফতরের এমনই নির্দেশের কথা জানান বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। বনমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই এই নির্দেশ ডিএফও-দের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘের আস্তানা গেড়ে থাকা নতুন কোনও ঘটনা নয়। বিশেষ করে সন্তান প্রসবের সময় স্ত্রী চিতাবাঘেরা চা বাগানের বিভিন্ন নালায় আশ্রয় নেয়। চা বাগান এলাকা থেকেই হাঁস-মুরগি সহ ছোটখাটো শিকার তারা সংগ্রহ করে৷ কিন্তু চা বাগানে এই আস্তানার ফলে চিতাবাঘের সঙ্গে মানুষের সংঘাতের সম্ভাবনাও এই সময় অনেকটাই বেড়ে যায় বলে জানান বনকর্মীরা।

গত ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটে বারবার চিতাবাঘের সঙ্গে মানুষের সংঘাতের ঘটনায় বনকর্তাদের কার্যত ঘুম উড়েছে। শেষ দুই মাসে ধুমচিপাড়া, রামঝোড়া ও গ্যারগেন্দা চা বাগানে দুই শিশু ও এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও ধুমচিপাড়া ও তুলসিপাড়া চা বাগান এলাকায় এক কিশোর ও এক বৃদ্ধ জখম হন। বৃহস্পতিবার ফালাকাটার রাইচেঙ্গা এলাকায় এ দিন ও চিতাবাঘের হানায় পাঁচ জন জখম হন।

চিতাবাঘ-মানুষের সংঘাত এমন বেড়ে যাওয়াতেই চা বাগান এলাকায় ধরা পড়া চিতাবাঘ নিয়ে এ বার নতুন ভাবনা শুরু হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চা বাগান এলাকায় ধরা পড়া বা খাঁচাবন্দি হওয়া চিতাবাঘগুলিকে অন্যত্র জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হত। তবে ধরা পড়া চিতাবাঘ জখম হলে সেক্ষেত্রে রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পর সুস্থ করে সেটিকে জঙ্গলে ছাড়া হত। কোনও কোনও ক্ষেত্রে জঙ্গলে ছাড়া নিরাপদ নয় বুঝলে সেই চিতাবাঘকে রেসকিউ সেন্টারেই রাখা হচ্ছিল।

বৃহস্পতিবার বন দফতর নতুন যে নির্দেশের কথা বলেছে, তাতে করে এ বার থেকে চা বাগান এলাকায় ধরা পড়া কোনও চিতাবাঘকেই আর জঙ্গলে ফেরানো হবে না। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ কলকাতা থেকে জানিয়েছেন, “এ বার থেকে চা বাগানের উপদ্রুত এলাকায় যেসব চিতাবাঘ ধরা পড়বে বা খাঁচাবন্দি হবে সেগুলির আস্তানা হবে রেসকিউ সেন্টার। তাদেরকে আর জঙ্গলে ফেরানো হবে না। তবে পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তীতে বেঙ্গল সাফারি কিংবা রসিক বিলের মত জায়গায় সেগুলিকে পাঠানো হতে পারে।” বনমন্ত্রী জানান, নতুন এই নির্দেশ ইতিমধ্যেই সমস্ত ডিএফও-দের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

বন দফতর সূত্রের খবর, শেষ দু’মাসে মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে পাতা খাঁচায় পাঁচটি চিতাবাঘ ধরাও পড়েছে। এর মধ্যে শেষ চিতাবাঘটি ধরা পড়েছে, এ দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হান্টাপাড়ায়। বনকর্তারা জানিয়েছেন, বাগান এলাকাগুলিতে খাঁচার সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। খাঁচা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Leopard Rescue Center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE