Advertisement
E-Paper

ধৃত মৃণাল, সঙ্গী ডাক্তার

শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব ছিল যাদের ওপর, দিনের পর দিন তারাই মোটা টাকা নিয়ে শিশু বিক্রি করেছে বলে দাবি সিআইডি-র। তাই শুক্রবার সন্ধ্যায় দার্জিলিং জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ এবং জেলার শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য চিকিৎসক দেবাশিস চন্দকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৫
গ্রেফতার: সিআইডি দফতরে ধৃত মৃণাল ঘোষ (বাঁ দিকে) ও দেবাশিস চন্দ (ডান দিকে)। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

গ্রেফতার: সিআইডি দফতরে ধৃত মৃণাল ঘোষ (বাঁ দিকে) ও দেবাশিস চন্দ (ডান দিকে)। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব ছিল যাদের ওপর, দিনের পর দিন তারাই মোটা টাকা নিয়ে শিশু বিক্রি করেছে বলে দাবি সিআইডি-র। তাই শুক্রবার সন্ধ্যায় দার্জিলিং জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ এবং জেলার শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য চিকিৎসক দেবাশিস চন্দকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে সিআইডি। জেরা করা হচ্ছে মৃণাল ঘোষে স্ত্রী সাস্মিতাকেও। তিনি জলপাইগুড়ি জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক। রাত পর্যন্ত তাঁকে জেরা করে সিআইডি অফিসারেরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলে সূত্রের খবর।

জলপাইগুড়ি হোম থেকে শিশু বিক্রির মোটা টাকা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষের কাছে পৌঁছত বলে সিআইডি-র দাবি। অভিযোগ, সেই টাকার বিনিয়মে তিনি ভুয়ো নথি তৈরির নির্দেশ দিতেন। অন্য দিকে, ভুয়ো নথিতে শিশু কল্যাণ সমিতির (সিডব্লিউসি) সদস্য দেবাশিস চন্দের সই রয়েছে বলে দাবি। সিআইডি-র বক্তব্য, দেবাশিস জেরায় জানিয়েছেন, মৃণালের নির্দেশেই তিনি বিভিন্ন নথিতে সই করেছেন। সিআইডি-র দাবি, জলপাইগুড়িতে চন্দনা চক্রবর্তীর হোম থেকেও মোটা টাকা দেবাশিসের কাছে পৌঁছত। শুক্রবার সন্ধে থেকে জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষকেও জেরা করছে সিআইডি। শিশু পাচার তদন্ত শুরু হওয়ার পরে তাঁকে শো-কজ করেছিল জেলা প্রশাসন। সিআইডি-র উত্তরবঙ্গের স্পেশাল সুপারিন্টেডেন্ট অজয় প্রসাদ বলেন, ‘‘মৃণাল এবং দেবাশিসের বিরুদ্ধে অবৈধ নথি তৈরি করে শিশু বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের কাছে কী ভাবে টাকা পৌঁছেছে, তা-ও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

জেরা: সাস্মিতা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

সিআইডি সূত্রের দাবি, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি দুই জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিকের পদে যোগ দেওয়ার আগে মৃণাল এবং সাস্মিতা দু’জনেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ওই সংগঠনের অনাথ এবং ভবঘুরে শিশু-কিশোরদের হোম থেকে অনেক শিশুকে কোনও নথি ছাড়াই চন্দনার হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের হোমে এনে প্রসবের পর শিশু কেড়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। যার কোনও নথিই তৈরি করা হতো না বলে সিআইডি জেনেছে। শিলিগুড়ির দু’টি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকা ভবঘুরে মহিলাদের থেকে শিশু কেড়ে জলপাইগুড়ি হোমে পাঠিয়ে দেওযার অভিযোগ রয়েছে। সেই শিশুদের পরবর্তীতে ভুয়ো নথি তৈরি করে দত্তকের নামে বিক্রি করা হয়েছে বলে দাবি।

নিয়ম অনুযায়ী, এক জেলার হোম থেকে অন্য জেলায় শিশু পাঠানো হলে দুই জেলার শিশু সুরক্ষা কমিটির অনুমোদন লাগে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই দুই জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক হওয়ায় কোনও নথি নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি বলে সিআইডি তদন্তে জেনেছে। গত সোমবারই চিকিৎসক দেবাশিসকে একপ্রস্ত জেরা করে সিআইডি। সে দিনই মৃণালের নাম তদন্তে উঠে আসে।

শুধু ভুয়ো নথি তৈরি নয়, অনেক সময়ে পুরনো তারিখেও নথি তৈরির অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত শুরু করে বেশ কিছু শিশুর হদিশ তদন্তকারীরা এখনও পায়নি। সিআইডির দাবি, ধৃত মৃণাল ঘোষ সেই শিশুদের হদিশ জেনে থাকতে পারেন। আজ শনিবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হবে।

Child Trafficking Arrest Doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy