Advertisement
০৫ মে ২০২৪

প্রচারের ধরন বদলে ভোট টানতে চায় সবাই

ভোট মানেই সভা আর দেওয়াল লিখন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই প্রচারে আমজনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পদ্ধতিও বদলেছে। এ বারের ইংরেজবাজার পুর নির্বাচনেও তারই প্রকাশ দেখছেন বাসিন্দারা। কোনও দলের সমর্থনে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছে ট্যাবলো। আবার কোনও দলের সমর্থনে এলাকার মোড়ে মোড়ে বক্সের মাধ্যমে বাজানো হচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৯
Share: Save:

ভোট মানেই সভা আর দেওয়াল লিখন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই প্রচারে আমজনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পদ্ধতিও বদলেছে। এ বারের ইংরেজবাজার পুর নির্বাচনেও তারই প্রকাশ দেখছেন বাসিন্দারা।

কোনও দলের সমর্থনে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছে ট্যাবলো। আবার কোনও দলের সমর্থনে এলাকার মোড়ে মোড়ে বক্সের মাধ্যমে বাজানো হচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য। এ বারের ইংরেজবাজার পুরসভায় জনসভার উপরে জোর না দিয়ে এমন প্রচারের উপরেই বেশি জোর দিচ্ছেন নেতানেত্রীরা। ফলে ভোটের ফলাফলের মতো প্রচারেও একে অপরকে টেক্কা দিতে মরিয়া তাঁরা। লড়াই জমেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।

ভোটের সপ্তাহখানেকও আর বাকি নেই। ইতিমধ্যেই পোস্টারে, ব্যানারে শহর ছয়লাপ। তবে গতানুগতিকতা মুক্ত হতে মিছিলেও থাকছে নতুনত্বের ছোঁয়া। মিছিলকে আকর্ষণীয় করতে কখনও ছোটা ভিমের কার্টুন বানিয়ে, কখনও সাইকেলকে সাজিয়ে নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চক্কর কাটছেন প্রার্থীরা। এই তালিকায় রয়েছে তৃণমূল থেকে শুরু করে বামফ্রন্ট, সকলেই। ইংরেজবাজার পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরছে তৃণমূলের ট্যাবলো। ওর্য়াডের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে দিনের ব্যস্ততম সময়ে বাজানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ। একই সঙ্গে রাজ্যের আরেক মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীরও বক্তব্য রেকর্ড করে বাজানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যগুলি এমন ভাবে বাজানো হচ্ছে যাতে মনে হচ্ছে তিনি যেন ভাষণ দিচ্ছেন। শহর জুড়েই সকাল সন্ধে বাজছে তা। এ বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিদায়ী চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডে এই ট্যাবলোগুলি ঘুরছে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা সরাসরি ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’ এর ফলে মানুষের সাড়াও ভালো মিলছে বলে তাঁর দাবি।

তৃণমূলের থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেয় বিজেপিও। বিজেপির আবার ট্যাবলো বদলে রিকশার উপরে জোর দিয়েছে। পুরসভার প্রতিটি ওর্য়াডে বিজেপির পতাকা-শোভিত রিকশা দাঁড়িয়ে থাকছে জনবহুল এলাকায়। বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উদ্যোগে নানা জায়গায় বাজানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে বাঁধা গান। বাজানো হচ্ছে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের বক্তব্যও। তাই মনে হচ্ছে যেন হেভিওয়েট নেতানেত্রীরা শহরে এসে বক্তব্য রাখছেন। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা বাড়ি গিয়ে প্রচারে জোর দিচ্ছি। তবে সবার কাছে পৌঁছতে এমনভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে।’’

তৃণমূল, বিজেপির থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেয় বামেরাও। অতীতে দেখা যেত বামেদের ফেস্টুন, ব্যানারে শুধু প্রার্থীর নাম ও দলের প্রতীক চিহ্ন থাকত। এ বার প্রতিটি ওয়ার্ডে ফেস্টুনে প্রার্থীর ছবিও ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের ধাঁচে ‘হোক কলরব’ স্লোগান দিয়ে বেশ কিছু ওয়ার্ডে ফেস্টুন বসানো হয়েছে। তাছাড়া বামেদের উপরে পুলিশের লাঠিচার্জে ঘটনাও ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপনের আকারে বাজারে বিলি করা হচ্ছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘ভোটারদের উৎসাহিত করতে এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুলিশ আমাদের উপর যে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে মানুষ দেখেছেন। তবুও পুলিশের অত্যাচার মানুষের কাছে তুলে ধরতে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।’’ পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। কংগ্রেস প্রার্থীরা ফেসবুকে তাঁদের দৈনন্দিন প্রচারের দৃশ্য সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে আপলোড করছেন। এবং মানুষদের ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন করছেন।’’ কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, ‘‘যুব সমাজ ফেসবুকের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই তাদেরকে বার্তা দিতে ফেসবুককে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’

প্রচারে আরও জোর আনতে তারকাদেরও আনতে চাইছে সব দলই। জনতা অবশ্য কার পক্ষে মত দেবে, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE