Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৩
GTA

দ্বিস্তর পঞ্চায়েতের সঙ্গে জিটিএ-র সমন্বয়ের ভাবনা

জিটিএ আইনে পাহাড়ের ক্ষেত্রে দ্বিস্তরীয় ব্যবস্থাকে জিটিএ-র সঙ্গে জুড়ে কাজ করার জায়গা রয়েছে। তাতে প্রকল্প রূপায়ণ, সমন্বয় সাধনের মতো দিক রয়েছে।

অনীত থাপা।

অনীত থাপা। — ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪৬
Share: Save:

দু’দশক পরে, পাহাড়ের দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সঙ্গে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর সমন্বয় সাধনের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত সোমবার জিটিএ প্রধান অনীত থাপা নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে, তিনি বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সেখানে পাহাড়ের জেলা পরিষদহীন গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি চালানো নিয়েও কথা হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী কি‌ছু দিনের মধ্যে নিয়ে সরকারি স্তরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

জিটিএ আইনে পাহাড়ের ক্ষেত্রে দ্বিস্তরীয় ব্যবস্থাকে জিটিএ-র সঙ্গে জুড়ে কাজ করার জায়গা রয়েছে। তাতে প্রকল্প রূপায়ণ, সমন্বয় সাধনের মতো দিক রয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার এবং জিটিএ চাইছে, আপাতত জেলা পরিষদের ঢঙে জিটিএ পাহাড়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালাক। তা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে পুরোদস্তুর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবধিও বিষয়টি গিয়েছে। প্রয়োজনে, পঞ্চায়েত আইনে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পঞ্চায়েত দফতর। বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘প্রায় ২৩ বছর পরে পাহাড়ে পঞ্চায়েতি-রাজ ফিরেছে। আগের বার পাহাড়ে পার্বত্য পরিষদ ছিল। পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চললেও কার্যকর হয়নি। পরে, তা ভেঙে পড়ে। এ বার তা যাতে না হয়, সে জন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।’’ আইনি দিক দেখেই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে ওই কর্তা জানান। তিনি জানান, কলকাতা হাই কোর্টে পঞ্চায়েত সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হলেই রাজ্যের জেলাগুলিতে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে এবং সম্ভবত তখনই পাহাড়ের নির্দেশিকা জারি হবে।

আশির দশকে সুবাস ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন হয়। এর পরে ,কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার মিলে ঘিসিংকে পার্বত্য পরিষদ নেওয়ার জন্য রাজি করায়। ঘিসিং পরিষদের মাথায় বসেন। সে সময় দার্জিলিং জেলা পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পাহাড়ি এলাকার জন্য পার্বত্য পরিষদ কাজ শুরু করে। দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েতের অবস্থান তার নীচে। জেলার সমতলে তৈরি হয় শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ।

পরে, ঘিসিংয়ের থেকে পাহাড়ের দখল বিমল গুরুংয়ের হাতে যায়। তবে নানা কারণে পঞ্চায়েত ভোট আর হয়নি সেখানে। গত বছর জিটিএ ভোটের সময় অনীতেরা পঞ্চায়েত ভোট ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দেন। হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওযার্ডও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চান। তাতেই রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে দু’দশক পরে, এ বার পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে।

এই সূত্রেই জিটিএ আইনের বাইরেও সরকার গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য নতুন পথ খোঁজার কাজ শুরু করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE