Advertisement
E-Paper

পেট চালাতে বন্ধ বাগানেই কাজে সামিল

শ্রমিকদের কথায়, ‘‘আমরা তো না খেয়ে মরতে পারব না। তাই কাজ করে কাঁচা চা পাতা বিক্রি করে পেটের ভাত জোগাড় করব।’’

রাজু সাহা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৮:০০
ব্যস্ত: কোহিনুর বাগানে কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: কোহিনুর বাগানে কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। নিজস্ব চিত্র

আলিপুরদুয়ার জেলার কোহিনুর চা বাগানে কাজ বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে বাগান ছেড়েছেন। কিন্তু কাজ বন্ধ করেননি শ্রমিকরা।

বুধবার ওই চা বাগানে গিয়ে দেখা গেল শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের কথায়, ‘‘আমরা তো না খেয়ে মরতে পারব না। তাই কাজ করে কাঁচা চা পাতা বিক্রি করে পেটের ভাত জোগাড় করব।’’ চা শ্রমিক ফুলতি ওঁরাও, পালহো ওঁরাও, বুদো ওঁরাও, বেরনিকা চিকবরাইকরা জানান, কাঁচা পাতা বিক্রি করবেন তাঁরা নিজেরাই। তাতে যে টাকা রোজগার হবে, তা ভাগ করে নেবেন নিজেদের মধ্যে। কারখানাতে চা পাতা পাঠানোর খরচও তাঁরাই বইবেন। বাগানের কাছাকাছিই এমন বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে।

বেরনিকা বলেন, ‘‘আমরা পরিশ্রম করে মালিক পক্ষের ঘরে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে দেব। আর মালিক পক্ষ প্রতিনিয়ত আমাদের প্রতি বঞ্চনা চালিয়ে যাবে, এটা তো চলতে পারে না।’’ শ্রমিকদের কথায়, চলতি বছর ২৫ মার্চ থেকে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত কাঁচা পাতা থেকে উৎপাদিত চায়ের পরিমাণ প্রায় তিন লক্ষ ৩৫ হাজার কেজি। যার আনুমানিক মূল্য ১৫০ টাকা কেজি দরে ৫ কোটি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু এই পাঁচ মাসে পিএফ বাবদ ১২ লক্ষ ৬২ হাজার ১৭৭ টাকাই জমা দেওয়া হয়নি। ১৭ জন শ্রমিক কর্মচারীকে পাওনা গণ্ডা না মিটিয়ে অবসর নিতে বাধ্য করেছে মালিক পক্ষ।

তারপরে গত রবিবার সন্ধ্যায় কোনও নোটিস না দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান মালিকেরা। মঙ্গলবার সকালে বাগানে কাজ বন্ধ রাখার নোটিশ পাঠায় মালিক পক্ষ। নোটিসে জানানো হয়েছে, আইনি জটিলতার কারণেই মালিকানার কাগজপত্র ঠিক ভাবে না পাওয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে।

কিন্তু চা বাগানে ৮৮৮ জন শ্রমিক কর্মচারী রয়েছেন। বিজেপি শ্রমিক নেতা কিষান মণ্ডল, চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের শিবনারায়ণ ঝা-রা জানিয়েছেন, বাগান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের প্রতি রীতিমতো অবিচার করা হল। কোহিনুর চা বাগানের শ্রমিক কর্মচারীদের প্রায় এক মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাঁদের দাবি, গত বছর ২৩ মার্চ উত্তরকন্যায় বৈঠকে সমস্ত বকেয়া মেটানোর সিদ্ধান্তে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়, সেই চুক্তি পূরণ না করে নোটিস দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে গেল মালিক পক্ষ। তৃণমূল চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি মোহন শর্মা জানিয়েছেন, ‘‘চা শ্রমিকদের তো চলতে হবে! তবে কোহিনুর চা বাগানে কাজ চালু রাখার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জানাব।’’ আলিপুরদুয়ার জেলা ডেপুটি লেবার কমিশনার কল্লোল দত্ত বলেন, “কোহিনুর চা বাগানে কাজ চালু রাখার বিষয়টি জানা নেই। ওই চা বাগানের অচলাবস্থা কাটাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’

অন্য ম্যানেজাররা বাগান ছেড়ে চলে গেলেও বাগানের শ্রমিকরা একজন সহকারী ম্যানেজার শুভ্র চৌধুরীকে বাগান থেকে যেতে দেননি। শুভ্রবাবু বলেন, ‘‘আমাকে শ্রমিকরা যেতে না দেওয়ায় বাগানে রয়েছি। শ্রমিকদের পাশে থাকতে চাই।’’

Tea Garden Closed Garden Workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy