ইউজিসির অনুমোদন না মেলায় পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বছর দুয়েক আগে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতদিনেও কেন তার অনুমোদন আদায় করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাসখানেক আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন শুভ্রাংশুশেখর চট্টোপাধ্যায়। তিনি ওই অনুমোদন আদায়ে উদ্যোগী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মার্চেই অনুমোদন আদায়ের জন্য দিল্লি যাবেন শুভ্রাংশুবাবু। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ওই শংসাপত্রের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী পরিকাঠামো প্রয়োজন। এখনও স্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। পুন্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবনেই চলছে পঞ্চাননবর্মা বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমান উপাচার্য শুভ্রাংশুবাবু অবশ্য আশাবাদী। মাস দুয়েকের মধ্যে তাঁরা ইউজিসির অনুমোদন পাবেন। তিনি বলেন, “অগস্ট নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ব্যাচ বেরোবে। ওই সময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা হবে। সেখানেই পড়ুয়াদের হাতে ডিগ্রির শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে। আশা করছি দ্রুত ওই অনুমোদন পেয়ে যাব। সেক্ষেত্রে কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।” তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী পরিকাঠামো থাকলে ভাল হয়। না হলেও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।
প্রাক্তন উপাচার্য ইন্দ্রজিত্ রায় অবশ্য দাবি করেছেন, ২০১৩ সালেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি শংসাপত্রের জন্য ইউজিসির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। তিনি বলেন, “ওই অনুমতির জন্য ‘বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট’ জুড়ে দিয়ে ইউজিসি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হয়। বিষয়টি আগাম খোঁজ নিয়ে জেনে আমরা ‘অ্যাক্ট’ জুড়ে দিয়েই আবেদন করি। তার পরেও ওই অনুমতি পেতে দেরি হওয়ায় দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে গত বছরের শেষের দিকে ইউজিসির চিঠি পাই। সেখানে তাঁরা ফের ‘বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট’ চেয়ে পাঠান। এর মধ্যে উপাচার্য হিসেবে আমার সময়কাল শেষ হয়। তবে ওই অনুমতি পেতে খুব বেশি সময় লাগে না। দিল্লি গেলে হাতে হাতে করিয়ে আনা যায়।” কলেজের এক শিক্ষক দাবি করেন, সেক্ষেত্রে তাঁর ওই বিষয় নিয়ে আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া দরকার ছিল। কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বহুদিন ধরেই চেষ্টা করছি। কিন্তু এখনও ওই অনুমোদন পাওয়া যায়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১২ সালে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য নিয়োগ করা হয়। ২০১৩ সালের শুরু থেকেই পঠনপাঠন শুরু হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম বছরেই ছ’টি বিষয়ের উপরে ছাত্র ভর্তি নেওয়া হয়। ভর্তি হন ১৯৮ ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। প্রথম বছর দ্বিতীয় বছরে আরও প্রায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। সব মিলিয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৫০ জনেরও উপরে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী অগস্ট মাসের মধ্যে প্রথম শিক্ষাবর্ষের পড়ুয়ারা তাঁদের চারটি ‘সেমিস্টার’ সম্পূর্ণ করবেন। এর পরেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy