রাজ্যের পূর্ত দফতরকে ‘এশিয়ান হাইওয়ে’ তৈরির দায়িত্ব দিল মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার রাজ্যের ক্যাবিনেট বৈঠকে এএইচ ২ এবং এএইচ ৪৮ তৈরির ছাড়পত্র মিলেছে। বৈঠকে স্থির হয়েছে প্রায় ১৩৭৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ করবে পূর্ত সড়ক বিভাগ। নেপাল-ভারত-বাংলাদেশ এবং ভূটান-ভারত-বাংলাদেশ যোগাযোগের এই সড়ক তৈরির জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক রাজ্যকে ঋণ দেবে। এই ঋণের জন্য কেন্দ্রের সুপারিশ প্রয়োজন। সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের মতো করে উদ্যোগী হচ্ছে বলে রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে। ২০০৮ সালেই এই সড়ক তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
মোট ১২৮ কিলোমিটার লম্বা সড়ক দু’টি তৈরির জন্য পূর্ত সড়ক বিভাগকে পৃথক ইউনিট গঠন করার ‘অনুমতি’ দিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রিসভা। সেই ইউনিটের সদর শিলিগুড়িতে গঠনের জন্য এ দিন নবান্নে রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিন নবান্নে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “দ্রুত এই সড়কের কাজ শুরু হবে। সড়ক তৈরি হলে উত্তরবঙ্গে পর্যটনের প্রসার যেমন হবে, তেমনই চিকিৎসা বা অনান্য প্রয়োজনে প্রতিবেশী দেশের বাসিন্দারাও সহজেই উত্তরবঙ্গে আসতে পারবেন।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এএইচ ২ নামে রাস্তাটি নেপালের কাঁকরভিটা থেকে দার্জিলিং জেলার পানিট্যাঙ্কি, বাগডোগরা, জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের বাংলাভাগা রোডে মিশবে। প্রায় ৩৮ কিলোমিটার লম্বা এই সড়ক তৈরি হলে নেপাল থেকে ভারত হয়ে সোজা বাংলাদেশ যাওয়া যাবে। ফুলবাড়ির ল্যান্ড কাস্টম এলাকা সম্প্রসারণ করা হবে। এএইচ ৪৮ নামে দ্বিতীয় সড়কটি ভূটানের ফুন্টসিলিং থেকে জলপাইগুড়ির জয়গাঁ, হাসিুমারা, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি হয়ে কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা দিয়ে বাংলাদেশের বুড়িমালি এলাকা পর্যন্ত হবে। প্রায় ৯১ কিলোমিটার লম্বা এই সড়কের মাঝপথে ধূপগুড়ি থেকে ময়নাগুড়ি পর্যন্ত ৩১ ডি জাতীয় সড়ক পড়বে। জাতীয় সড়কের অংশটি অবশ্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই তচৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করবে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু জানিয়েছে, কেন্দ্রের তরফে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কে ঋণের জন্য যত তাড়াতাড়ি সুপারিশ করা হবে, বরাদ্দ মিলতে তত সুবিধে হবে। বরাদ্দ মেলার পরেই দ্রুত টেন্ডার করে কাজ শুরু হবে। ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটান, এই চার দেশের মধ্যে সংযোগকারী উন্নত সড়ক ব্যবস্থা তৈরির করার প্রস্তাব রয়েছে বহুদিন ধরেই। যাকে এশিয়া করিডর বলা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি তারই অংশ বলে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানাচ্ছেন। এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ গড়ে তুলতে নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকেই এশিয়ান হাইওয়ে তৈরির পরিকল্পনা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy