Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কার্শিয়াঙে সড়ক-অবরোধ, দুর্ভোগ পর্যটকদের

গাড়ির ধাক্কায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দিনভর অবরোধ-বন্ধে বিপর্যস্ত কার্শিয়াঙের জনজীবন। ওই চালককে গ্রেফতারের দাবিতে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েক জন হঠাৎ বন্ধ ডাকায় বাজার এলাকার দোকান বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন পর্যটকেরা। তাঁদের অনেকেই খাবার-পানীয় কিনতে পারেননি।

পুলিশ-অবরোধকারী তর্কাতর্কি। কার্শিয়াঙে বৃহস্পতিবার। ছবি: রবিন রাই।

পুলিশ-অবরোধকারী তর্কাতর্কি। কার্শিয়াঙে বৃহস্পতিবার। ছবি: রবিন রাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩০
Share: Save:

গাড়ির ধাক্কায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দিনভর অবরোধ-বন্ধে বিপর্যস্ত কার্শিয়াঙের জনজীবন। ওই চালককে গ্রেফতারের দাবিতে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েক জন হঠাৎ বন্ধ ডাকায় বাজার এলাকার দোকান বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন পর্যটকেরা। তাঁদের অনেকেই খাবার-পানীয় কিনতে পারেননি। জাতীয় সড়কে অবরোধ চলতে থাকায় দার্জিলিঙের পথেও দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়ে বহু গাড়ি। বিকেলে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠলেও, এ দিন দোকান খোলেনি। রাতে অভিযুক্ত চালক গোলক মোহন্তকে গ্রেফতার করে এনজেপি ফাঁড়ির পুলিশ। তাকে কার্শিয়াং থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ হিলকার্ট রোডে স্কুলে যাওয়ার পথে একটি ছোট গাড়ির ধাক্কায় সিলহা সারকি (১৪) নামে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পরেই চালক গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। গাড়িটিকে পরে উদ্ধার করা হলেও, চালকের খোঁজ মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পরেই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ শুরু করেন। বিভিন্ন বাজার এলাকার দোকান বন্ধ হতে শুরু করে। বিকেল ৫টা নাগাদ পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। কার্শিয়াঙের এসডিপিও চন্দ্র বাহাদুর সুব্বা বলেন, “দুর্ঘটনার পরেই গাড়ির চালক পালিয়ে যায়। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তোলা হয়েছে।”

আচমকা অবরোধ-বন্ধের জেরে নাকাল হতে হয় বহু পর্যটককে। দিল্লির বাসিন্দা ব্রহ্মানন্দ স্বরূপ বলেন, “দার্জিলিং থেকে ফেরার পথে অবরোধে বেশ কয়েক ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে। সারা দিন জল পর্যন্ত কিনতে পারিনি।” তাঁর এ দিন দিল্লি ফেরার কথা ছিল। তা-ও বাতিল করতে হয়েছে বলে জানান তিনি। কলকাতা থেকে আসা সুশান্ত ঘোষ জানান, তাঁদের সঙ্গে পরিবারের ছোটরাও ছিল। তিনি বলেন, “তাদের খাওয়ার জোগাড় করতে যা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল, তা বলে বোঝানো যাবে না। সারা দিন শুধু বিস্কুট আর চিপস খেয়ে থাকতে হয়েছে।”

অবরোধে আটকে পড়ে ভোগান্তিই শুধু নয়, যাতায়াতের গাড়ি না পেয়েও অনেক পর্যটককে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কার্শিয়াং থেকে মিরিক, দার্জিলিং যাওয়ার গাড়ি এ দিন সকালের পরে মেলেনি বলে অভিযোগ। হুগলি থেকে আসা পর্যটক মলয় মণ্ডল বলেন, “রাতে ট্রেন ধরার তাড়া আছে। তাই বাধ্য হয়ে চড়া দামে গাড়ি ভাড়া করতে হয়েছে। অন্তত তিন গুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে।”

পর্যটকদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে নিয়ে, ঘটনার পিছনে কোনও রাজনীতি নেই বলে দাবি করেছেন জিটিএ-র সদস্য তথা মোর্চা নেতা যোগেন্দ্র রাই। তাঁর দাবি, “দুর্ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ হয়েই বাসিন্দারা আন্দোলন শুরু করেন। তবে আমাদের ছাত্র সংগঠনের তরফে অভিযুক্ত চালককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kurseong blockade tourists
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE