Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কুড়ি মিনিটে লন্ডভন্ড গ্রাম

গোটা গ্রামই লন্ডভন্ড হয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবে। কারও ঘরের চালের টিন উড়িয়ে নিয়ে ফেলেছে নর্দমায়, কারও গোটা ঘরটিকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়েছে মাটিতে। ভয়ে কেউ আশ্রয় নিয়েছিলেন খাটের নীচে। কেউ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে জপ করেছেন ভগবানের নাম। রবিবার রাতে ২০ মিনিটের ঝড়ে এমনই অবস্থা হয়েছে কোচবিহার শহর থেকে ১০ কিমি দূরে ছাট গুড়িয়াহাটি রেল লাইনের পাড় এলাকার।

ভূপতিত বাঁশ বাগান। কোচবিহারের ছাট গুড়িয়াহাটি এলাকায় হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি।

ভূপতিত বাঁশ বাগান। কোচবিহারের ছাট গুড়িয়াহাটি এলাকায় হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৪ ০১:৫০
Share: Save:

গোটা গ্রামই লন্ডভন্ড হয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবে। কারও ঘরের চালের টিন উড়িয়ে নিয়ে ফেলেছে নর্দমায়, কারও গোটা ঘরটিকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়েছে মাটিতে। ভয়ে কেউ আশ্রয় নিয়েছিলেন খাটের নীচে। কেউ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে জপ করেছেন ভগবানের নাম। রবিবার রাতে ২০ মিনিটের ঝড়ে এমনই অবস্থা হয়েছে কোচবিহার শহর থেকে ১০ কিমি দূরে ছাট গুড়িয়াহাটি রেল লাইনের পাড় এলাকার।

ওই এলাকার একটি মাদ্রাসা ঝড়ের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে। সেখানকার ৩০ জন ছাত্র আশ্রয় নিয়েছেন এলাকারই একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ভবনে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই এলাকাতেই প্রায় ৪০টি বাড়ি ভেঙে পড়ে। ১ নম্বর ব্লকে শতাধিক বাড়ি ভাঙে। কোচবিহার ২ ব্লকের বাণেশ্বর, খাপাইডাঙা, আমবাড়ি, খোলটা ছাড়াও তুফানগঞ্জ ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিঘের পর বিঘে জমির ধান ও পাট খেত নেতিয়ে পড়েছে। বহু জায়গায় গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে। বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে রয়েছে কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকা।

এদিন সকালে ছাট গুড়িয়াহাটির ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বহু বাড়ির টিনের চাল নেই। এলাকার বাসিন্দা মহিরুদ্দিন মিয়াঁ জানান, রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ তিনি রাতের খাবার খেতে বসেছিলেন। সেই সময় ঝড় ওঠে। নিমেষেই তার ঘরের টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। তিনি ঘর থেকে দৌড়ে আরেক ঘরে যান। ততক্ষণে গোটা বাড়িট মাটিতে ফেলে দিয়েছে ঝড়। তিনি বলেন, “ঝড় আমাদের ঘর কেড়ে নেওয়ায় আমরা এখন সরকারি সাহায্যের উপর আশা করে আছি।”

ওই এলাকাতেই একটি বেসরকারি মাদ্রাসা রয়েছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিকি জানান, মাদ্রাসায় ৩০ জন ছাত্র রয়েছে। রাতে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে তাঁরা খাওয়াদাওয়া করে। প্রতিদিনের মতো ওইদিনও রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁরা সবাই খাওয়ার জন্য বের হয়। মাদ্রাসায় শুধু আবু বক্কর সিদ্দিকি এবং এক দশ বছরের ছাত্র রাহুল হক ছিল। সেই সময় ঝড় ওঠে। আবু বক্কর বলেন, “প্রথমে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। শো শো শব্দ শুরু হয়। প্রথমটায় ভাবি ট্রেন আসছে। পরে বুঝতে পারি ঝড়। বুঝেও কিছু করার ছিল না। নিমেষে ঘরটা ভেঙে যায়। টিন উড়িয়ে নিয়ে যায়। রাহুল আমাকে ভয়ে জড়িয়ে ধরে। আমারও খুব ভয় করছিল। পালানোর কোনও সুযোগ ছিল না। তাই ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kochbihar storm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE