Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে, ঘেরাওয়ের হুমকি বিজেপি-র

পুরভোটের মুখে দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে বলে দাবি করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ঘেরাও করার হুমকি দিল বিজেপি। বুধবার দুপুরে দলের জেলা সভাপতি রথীন বসু ওই হুমকি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর নিদের্শেই এমনটা শুরু হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০২:০৩
Share: Save:

পুরভোটের মুখে দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে বলে দাবি করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ঘেরাও করার হুমকি দিল বিজেপি। বুধবার দুপুরে দলের জেলা সভাপতি রথীন বসু ওই হুমকি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর নিদের্শেই এমনটা শুরু হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। রথীনবাবু বলেন, “পুরভোট এগিয়ে আসতেই তৃণমূল এক শ্রেণির পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ অফিসারদের ময়দানে নামিয়ে দিয়েছে। মন্ত্রী গৌতমবাবুর নির্দেশেই এমনটা হচ্ছে বলে আমাদের অনুমান। এটা বন্ধ করা না হলে দোল উত্‌সবের পর আমরা পুলিশ কমিশনারেট ঘেরাও করব। রাস্তা নেমে আন্দোলনও হবে।”

বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “বিজেপির ওই মনগড়া অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে পারব না। কোথাও এমন হয়েছে তাও আমি জানি না। আর পুলিশ পুলিশের কাজ করছে। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার বা করার নেই।” মন্ত্রী জানান, কোথাও অসমাজিক কাজকর্ম হলে তো পুলিশ ব্যবস্থা নেবেই। সেখানে ধৃতদের যদি কোনও দলের লোক হন, তাতে তো কিছু করার নেই। আর শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা এই প্রসঙ্গে বলেন, “রাজনীতি, পুরভোটের কোনও কিছু বলতে পারব না। কোথাও কোনও সমস্যা হলে বা অভিযোগ এলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবেই। সবক্ষেত্রেই তাই হচ্ছে। পক্ষপাতিত্বের কোনও ব্যপার নেই।”

শিলিগুড়ির বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, সম্প্রতি পুর এলাকার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, হুমকির মিথ্যা অভিযোগ করিয়ে দলের কয়েকজন যুবককে ধরা হয়েছে। একইভাবে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকজন সক্রিয় সদস্যরে চুরি, ডাকাতির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ জমা করিয়ে পুলিশ ওই কাজ করেছে। উল্টোদিকে, বুধবার মাটিগাড়ার শিসাবাড়িতে কর্মীদের মারধর করে দলীয় দফতর ভেঙে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে অভিযোগ করা হলেও পুলিশ ঠিকঠাক ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তৃণমূল নেতাদের কথামত একশ্রেণির পুলিশ অফিসারেরা ওই কাজ করেছেন। যদিও পুলিশের দাবি, প্রতি ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারের ঘটনাগুলি ঘটেছে।

এদিন রথীনবাবু শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) ডাকা একের পর এক নাগরিক সভা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানান, প্রথমে দীনবন্ধু মঞ্চে, তার পরে মার্গারেট স্কুলে দুটি নাগরিক সভা হল। মন্ত্রী বিভিন্ন উন্নয়নের কাজের ফিরিস্তি দিলেন। নানা প্রশ্নও উঠে এল। গত চার বছর ধরে মন্ত্রী মানুষের কথা এমনভাবে শুনে তা না করায় প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ভোটের প্রচার হচ্ছে নাগরিক সভাগুলিতে। রথীনবাবুর কথায়, “মন্ত্রী আরও দুটি সভা ডেকেছেন বলে শুনছি। সেখানে দলের লোকজন এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের রেখে প্রচার ছাড়া কিছু হচ্ছে না। মানুষের কাজ করতে হলে আগেই উনি সভা করে বাসিন্দাদের বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে কাজ করতেন।”

বিজেপি নেতারা জানিয়েছে, শহরের অন্যতম সমস্যা ট্রাফিক সমস্যা নিয়ে মন্ত্রী কোনও কিছুই বলছেন না। যানজট, অপরিকল্পতি ট্রাফিক ব্যবস্থার জেরে মানুষ রোজ নাজেহাল হচ্ছেন, সেইদিকে কোনও নজর দেওয়া হচ্ছে না। তবে বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী গৌতমবাবুর জবাব, “এখনও ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তাই সরকারি ব্যবস্থাকে কাজে লাগানোর কোনও ব্যাপার নেই। আসলে বিজেপি বুঝে গিয়েছে, এবার ভোটে তাদের কোনও হাওয়াই আর কাজ করছে না। তাই প্রতিদিন নানা কথা বলে বিজেপি নেতারা প্রচারের আলোয় থাকতে চাইছেন।”

মন্ত্রী জানান, ট্রাফিক ব্যবস্থা পুলিশ ঢেলে সাজাবে। সেগুলি সবই পুলিশ কর্তারা দেখছেন। আর রাস্তা, নিকাশি, জঞ্জাল অপসারণ, বিদ্যুত্‌, সৌন্দর্য্যকরণস-সহ একাধিক বিষয়ে যা কাজ হয়েছে, তা দেখেই বিরোধীদের মাথা ঘুরে গিয়েছে। তাই অভিযোগ, রাজনীতি ছাড়া ওঁদের করার কিছু নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp threat gherao siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE