Advertisement
১৭ মে ২০২৪

কর্মচারী সংগঠনের রাশ নিয়ে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সংগঠনের রাশ কাদের হাতে থাকবে, তা নিয়ে শাসক দল তৃণমূলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দেড় বছর আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসকদল নিয়ন্ত্রিত সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু অ্যাসোসিয়েশন গড়ে গুরুচরণ রায় নামে এক জনকে তার আহ্বায়ক করা হয়। বর্তমানেও তিনি আহ্বায়ক।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩১
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সংগঠনের রাশ কাদের হাতে থাকবে, তা নিয়ে শাসক দল তৃণমূলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দেড় বছর আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসকদল নিয়ন্ত্রিত সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু অ্যাসোসিয়েশন গড়ে গুরুচরণ রায় নামে এক জনকে তার আহ্বায়ক করা হয়। বর্তমানেও তিনি আহ্বায়ক। সেখানে এতদিন স্থায়ী কর্মীরাই ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে আইএনটিটিইউসি-র অধীনে একটি আলাদা সংগঠন রয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্টস ফ্যাকালটির ১০৯ নম্বর ঘরে সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য নেতৃত্ব সভা করেন। অস্থায়ী কর্মীদেরও তাদের সংগঠনে সামিল করার কথা তাঁরা ঘোষণা করেন। তা নিয়েই দুই পক্ষের বিবাদ শুরু হয়েছে।

স্থায়ী কর্মীদের একাংশও তা মেনে নিতে চাননি। তাঁরা জানান, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে অস্থায়ী কর্মীরা আইএনটিটিইউসি-র সংগঠনে থাকবেন। স্থায়ীরা শিক্ষাবন্ধু সংগঠনে থাকবে। তা কেন মানা হচ্ছে না, তা নিয়ে এ দিন সভার মধ্যেই বাদানুবাদ শুরু হয়। আইএনটিটিইউসি-র অধীনে অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠন থাকবে বলে দাবি করেন দোলা সেনের অনুগামীরাও।

এ দিন শিক্ষাবন্ধু সংগঠনের রাজ্য নেতারা জানান, আইএনটিটিইউসি-র অস্থায়ী কর্মীদের আলাদা কোনও সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে না। সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি দেবব্রত সরকার বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষা বন্ধু সংগঠনই থাকবে। সে কথা জানানো হয়েছে। সেখানে স্থায়ী, অস্থায়ী কর্মী সকলেই থাকবেন।” শিক্ষাবন্ধু কর্মচারী সংগঠনের রাজ্য সভাপতি-সহ ৩ জন সোমবার উত্তরবঙ্গে আসেন। তাঁরা অস্থায়ী কর্মীদের দলে টানার চেষ্টা করছেন আঁচ পেয়ে আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অরূপরতন ঘোষ সোমবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি সাফ জানিয়ে দেন আইএনটিটিইউসি-র অধীনে অস্থায়ী কর্মীদের ইউনিয়ন-ই থাকবে। এ কথা মাথায় রেখেই যেন সকলে চলেন। তা ছাড়া তাদের সংগঠনেই অধিকাংশ অস্থায়ী কর্মীরা রয়েছেন। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বৈঠকে যাওয়ার কথা স্বাকীর করেছেন অরূপবাবুও। তবে শিক্ষা বন্ধু অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অরূপবাবু বলেন, “অস্থায়ী এবং দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইএনটিটিইউসি-র অধীনে কর্মী সংগঠন রয়েছে। দলের রাজ্য নেতারা সবই জানেন।”

অরূপবাবু আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি হওয়ায় দোলা সেনের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কর্মচারী সংগঠনের একাংশ জানান, বছর দুয়েক আগে আইএনটিটিইউসি-র অধীনেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় অস্থায়ী কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন নামে দুটি আলাদা সংগঠন তৈরি হয়। তারও কয়েক মাস পরে স্থায়ী কর্মীদের নিয়ে সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু অ্যাসোসিয়েশন গড়ে উঠলে আগের অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠন উঠে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত ২৫০ অস্থায়ী কর্মী এবং তিনশতাধিক স্থায়ী কর্মী রয়েছেন বলে সংগঠন সূত্রেই জানা গিয়েছে। অস্থায়ীদের কয়েক জন সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সংগঠনে সামিল হলেও বাকিরা তাঁদের দিকে রয়েছেন বলে আইএনটিইউসি নেতৃত্বের দাবি। যদিও শিক্ষাবন্ধু সংগঠনের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক গুরুচরণ রায়ের দাবি, “আমাদের সঙ্গেই বেশিরভাগ কর্মীরা রয়েছেন। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবন্ধু অ্যাসোসিয়েশনই থাকবে। কারা কী বলছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

employee committee tmc soumitra kundu siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE