Advertisement
০২ মে ২০২৪

কলেজ ভোট নিয়ে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

দলাদলি ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে সামিল হওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। যুযুধান দুই শিবিরের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা এড়াতে গড়া হয় বিশেষ কমিটিও। তারপরেও দলের ছাত্র সংগঠনের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর প্রার্থীরা মুখোমুখি হচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩০
Share: Save:

দলাদলি ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে সামিল হওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। যুযুধান দুই শিবিরের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা এড়াতে গড়া হয় বিশেষ কমিটিও। তারপরেও দলের ছাত্র সংগঠনের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর প্রার্থীরা মুখোমুখি হচ্ছেন। ফলে কোচবিহারের বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজের কর্তৃত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে টিএমসিপি-র গোষ্ঠীবিবাদ ফের প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। গোটা ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে শাসক দলের। কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই ছাত্র সংসদের আসন বণ্টন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। একপক্ষ তা মানলেও, অন্য পক্ষ অতিরিক্ত প্রার্থী রেখেছেন। গোটা বিষয়টি দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানান হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হবে।”

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজের ছাত্র সংসদের মোট আসন ২১টি। বুধবার প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরোনোর পর মোট ৩২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। তার মধ্যে ৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তারা সকলেই জেলা তৃণমূল নেতা অভিজিত্‌ দে ভৌমিক এবং টিএমসিপি-র রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। ওই কলেজের অধ্যক্ষ চঞ্চল মন্ডল বলেন, “১৭টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হবে। ২২ জানুয়ারি ওই ভোট হওয়ার কথা ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।”

দলীয় সূত্রের খবর, ওই কলেজের কর্তৃত্ব নিয়ে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি সাবির সাহাচৌধুরী ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি শুভজিত্‌ কুন্ডুর অনুগামী বলে পরিচিতদের সঙ্গে তৃণমূল নেতা অভিজিত্‌ দে ভৌমিক, টিএমসিপি রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায়ের অনুগামীদের দীর্ঘদিন ধরে গোলমাল চলছে। গত এক মাসে অন্তত চার দফায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই পরিস্থিতিতে ৬ জানুয়ারি দলের রাজনৈতিক কর্মী কনভেনশনে যোগ দিতে কোচবিহারে আসেন তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সি ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল মহাসচিব শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু প্রকাশ্যেই কলে জ নির্বাচনে দলাদলি ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে নির্দেশ দেন দুই গোষ্ঠীকে। ওই দুই শীর্ষ নেতার উদ্যোগে বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজে আসন বণ্টন নিয়ে সমঝোতা সূত্র বের করতে তৃণমূল জেলা সভাপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটিও তৈরি করা হয়। দফায় দফায় কমিটির কর্তারা দুই শিবিরের ছাত্র নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। তাতেও ঐকমত্য হয়নি। টিএমসিপি জেলা সভাপতি সাবির বলেন, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে আমরা ১১টি আসনে মনোনয়ন রেখে বাকিগুলি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। পুরো বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। কোচবিহারের যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি শুভজিত্‌ কুন্ডুও দাবি করেছেন, “আমরা রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেছি।” অভিজিত্‌বাবু কিংবা রাহুলবাবু ওই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে অভিজিত্‌-রাহুল শিবিরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত টিএমসিপি-র কোচবিহার জেলা কার্যকরী সভাপতি সায়নদীপ গোস্বামী বলেন, “রাজ্য নেতৃত্ব গত নির্বাচনে জয়ীদের সবাইকে টিকিট দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অথচ আমাদের তালিকা মেনে ওই ফর্মুলা অনুযায়ী সোমালি দত্ত, সন্দীপা রায়, সোহম চৌধুরীর মতো অনেককে মনোনয়ন দিতে জেলা সভাপতি রাজি হননি। বাধ্য হয়েই সমস্ত আসনে আমাদের প্রার্থী দিতে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেও গিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

college election coochbehar tmc clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE